সম্পাদকীয়
পৃথিবীতে কিছু কিছু কাজের অভ্যন্তরে পরিছন্নতা থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে পরিচ্ছন্নতার মিশনটি মুছে ফেলা হয়। স্বার্থান্বেষী কিছু মানুষের অপতৎপরতায়। সঠিক উদ্দেশ্যটি… ন হয়ে যায়। এমন কাজ অহরহ হয়ে থাকলে বাংলাদেশ শিক্ষাব্যবস্থায় বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নিবন্ধন পরীক্ষার পদ্ধতি চালু করেছিল সেটার পক্ষে একটা প্রতারণার ফাঁদ ছিল। প্রতারণার মাধ্যমে সঠিক নিয়ম মাফিক যে নিয়োগ পদ্ধতি টি হওয়ার কথা ছিল সেটি থেকে নীতিনির্ধারকরা সরে গেছে। তার অনেক নজির রয়েছে যা জন্য কোর্টে মামলা হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে শিক্ষকের গুরুত্ব সর্বাগ্রে। কারণ সাজানো-গোছানো প্রতিষ্ঠান ছাড়াও শিক্ষকের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চলে এসেছে অনাদিকাল থেকে। ফলে শিক্ষা সমগ্র পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশ ও তার থেকে পিছিয়ে নয়। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যতদূর জালিয়াতি হয়েছে তা বেশি দেরী হলেও পদক্ষেপ নিয়েছে সেজন্য সুচিন্তিত শিক্ষিত সমাজের কিছু মানুষের স্বস্তি ফিরেছে। ২২ মে দৈনিক শপথ পত্রিকায় প্রকাশ থাকছে না নিবন্ধন পরীক্ষা বড় পরিবর্তন আসছে এনটিআরসি তে। এই পরিবর্তন যত বেশি দেরি করে হয়েছে তার চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাব্যবস্থার শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে। সঠিক শিক্ষক নিয়োগ এবং শিক্ষার মানকে তলিয়ে দিয়েছে তা থেকে জাতি বেরিয়ে আসতে কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ বছর লেগে যাবে। যার ফলশ্রæতিতে সুশিক্ষার সুশিক্ষিত জাতি সুশিক্ষিত সমাজ গঠন করা কঠিন হয়ে যাবে। যেটি ছিল সেটাই ভাল ছিল নিয়োগের পদ্ধতিটা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নেয়া উচিত ছিল। সঠিক যোগ্য ব্যক্তিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ত করা গেলে বর্তমান এমন ভঙ্গুর মানসিকতার যুবসমাজ আমাদেরকে দেখতে হতো না। বর্তমান যুবসমাজ কোন না কোনভাবে নৈতিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে আছে। এমনকি এই বিচ্যুতির পেছনে রয়েছে বিশাল দুর্নীতিগ্রস্ত অনিয়মের বেড়াজাল। সে জাল ছিড়ে শিক্ষক নিয়োগ হয়নি যার কারণে শিক্ষার মান কলুষিত হয়ে পড়েছে। একবিংশ শতকের প্রথম দশকে যদিও শিক্ষার পরিবেশ মানানসই ছিল কিন্তু পরবর্তীতে এসে শতভাগ শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে মূল শিক্ষার নির্ভরযোগ্য মান অতলে তলিয়ে দিয়েছে। শিক্ষিত সমাজ আছে শিক্ষিত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ বাড়েনি এবং মানসম্মত শিক্ষিতের সংখ্যা বাড়েনি। শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে এনটিআরসি নামে একটি সংস্থা কাজ করেছে এদের বেলেল্লাপনা কারণে অযোগ্য লোকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশের পথ সুগম হয়েছে। আর সুশিক্ষার পথ দুর্গম হয়েছে। এখন যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সে উদ্যোগ কার্যকর হলে ৯০ দশকের নৈতিক চিন্তা-চেতনার ফলাফল প্রকাশ হতে পারে। তবে যেহেতু শিক্ষক নিয়োগ হয়ে গেছে সেখানে যে পরিমাণ নৈতিক চিন্তা-চেতনার সম্পৃক্ত মানসিকতা সম্পন্ন শিক্ষিত সমাজ ও যুবসমাজ গড়ে তোলা কঠিন হয়ে যেতে পারে। আরো বড় বিষয় হলো বাংলাদেশ শিক্ষার ক্ষেত্রে শিশু শ্রেণী থেকে শুরু করে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শতভাগ শিক্ষার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মুখি রাখতে গিয়ে যে উত্তীর্ণ রেখে শিক্ষার্থী ঝরানো যাবে না এই নীতিটা শিক্ষাব্যবস্থাকে সামাজিক ব্যবস্থাকে ব্যাপকভাবে কলুষিত করে ফেলেছে। আলো আঁধার ভালোমন্দ সত্য-মিথ্যা সকল কিছু থাকবে এটাই পৃথিবীর নিয়ম। মানুষের জীবনের ক্ষেত্রে অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন এবং নিরক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এই বিষয়টি ভুলে গিয়ে শিক্ষাব্যবস্থায় যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেটার জন্য জাতিকে বহুমুখী অকল্যাণের মুখে পতিত হতে হচ্ছে।