দুর্নীতিতে র্দুনাম। অপবাদে অপমান। এটা চিরন্তন সত্য। দুর্নীতির ছোঁয়া আজ রন্দ্রে রন্দ্রে যেমন বিচরন করছে। ঠিক-দুর্নীতির মূলৎপাটনেও নিরলসভবে কাজ করছে ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ও সরকারের বিভিন্ন এজেন্ডা। ফলাফল: কোন কোন ক্ষেত্রে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা গেলেও, অনেক ক্ষেত্রেই চলছে দুর্নীতির মহোৎসব। বিভিন্ন মিডিয়া ও আদালতের আদেশে লোকালয়ে চলে আসে দুর্নীতির চিত্র। অপরাধ না করেও স্বার্থানেষীদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য সুকৌশলে অনেক নিরাপদ মানুষ দোষী সাবস্ত হয় হর-হামেশা। যেমন জময়া নাটক জলন্ত উদাহরণ। সিনেমা, নাটকে দেখানো সাজানো অপরাধগুলো আমাদের সমাজের চিত্র।
কথা হল : অপরাধীদেরকেই নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর। তারপর নিরাপদ মানুষকে কেন অপরাধী সমান্তরালে পৌছাবে? স্পষ্ট, সেই অপরাধীদের আস্ফালন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দুর্নীতির তকমায় বাংলাদেশের অবস্থান ক্রমাগত উন্নয়ন ধারায়। বর্তমানে যা অব্যাহত। পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির খরগ, দেশী ও আর্ন্তজাতিক কুটকৌশলীদের একটি রূপকথার সাজানো নাটক। সরকারকে বেকায়দায় ও উন্নয়ন সংকুচিত করতেই এই অপচেষ্টার মহড়া ছিল। অতঃপর ভিনদেশের আদালতে প্রমাণীত বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততা নেই। যেখানে টাকা দেওয়াই হলো না সেখানে কিভাবে দুর্নীতি হলো। সেই প্রশ্নের বাস্তব উত্তর নিজ অর্থায়নে দৃশ্যমান স্বপ্নের পদ্মা সেতু। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের দুর্নীতির ভূমি ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ক সংবাদ জাতীয় ও জেলা সংবাদ পত্রে সয়লাব। চাঁদপুরের সন্তান হিসেবে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার সংবাদে আমরা সবাই মহাখুশি। এই খুশির বার্তায় সম্পৃক্ত স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ^বিদ্যালয় হবে চাঁদপুরে। জ্ঞান বিজ্ঞানের বিস্তার হবে বিশ^ময়। আজ অংকুরেই দুর্নীতির আওয়াজ! ষড়যন্ত্র ও বিভিন্ন প্রশ্নে জড়াজীর্ণ? এই ধারাবাহিকতায় চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ আজ ভাসমান অস্তিত্বে। অর্থ, বিত্ত, জনবল প্রশাসন অনুকূলে থাকা সত্বেও চাঁদপুরের উন্নয়ন গন্তব্যহীন। অথবা পিছন থেকে লাগাম টেনে রাখছে অদৃশ্য স্বার্থান্বেষীচক্র!
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় শুরুতে আলোচিত-সমালোচিত। স্থান নির্ধারণেও আছে মত পার্থক্য। ভূমি অধিগ্রহণে ক্রয় মূল্য নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ও তার পরিবার নিয়ে সরগোল চাঁদপুরের গণমানুষ। পক্ষে-বিপক্ষে তুমুল যুক্তি খন্ডন, প্রশ্ন উত্থাপন, চুল ছেরা বিশ্লেষণ। শত% মাফকাটিতে কোন প্রতিষ্ঠানেই বৃহৎ কর্মসম্পাদন করতে পারে না। তথাপিও অন্যায় অপরাধ ও দুর্নীতির আশ্রয় দেওয়া যাবে না। যথাসম্ভব স্বচ্ছতার ভিত্তিতে কর্মসম্পাদন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য বটে। বিশ^বিদ্যালয়ের ভূমি প্রক্রিয়ায় কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করার মানদÐ আছে। সে প্রক্রিয়ায় জেলা প্রশাসক জেলার প্রধান ভূমিকায়। এই প্রক্রিয়ায় কোন অসংগতি থাকলে প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় তা বিবেচিত হবে না এটাই ন্যায় সঙ্গত। স্থানীয় ও জাতীয় পত্রপত্রিকায় জেলা প্রশাসনের প্রতিবেদন এবং হিসাব নিকেশে একটি অংক তুলে ধরা হয়েছে। বিশ^বিদ্যালয় নির্মাণ নিয়ে দুর্নীতি হোক এটা যেমন চাঁদপুরবাসী চায় না। অনুরূপ ভাবে কাউকে অযাচিত টার্গেট করে বিধি বর্হিভূতভাবে অপরাধে জড়ানো অনভিপ্রেত। পত্রিকায় প্রকাশিত ৬২.৫ একর মৌজা দরের ২০গুণ দামে দলিল করা হয়। আবার দেখানো হয়েছে, প্রকৃত মৌজা দরে অধিগ্রহণের ব্যয় ১৯৪ কোটি টাকা। আর উচ্চ মূল্য দেখানো হয় ৫৫৩ কোটি টাকা। প্রশ্ন হচ্ছে ১৯৪ কোটি টাকার ২০ গুণ কি ৫৫৩ কোটি টাকা? জেলার সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল দপ্তর থেকে এ ধরনের উদ্ভট অংকের গড়মিলে প্রকাশ পায়। শর্ষ্যরে মধ্যে ভূত! ডিজিটাল যুগে এই অংকের সুত্র জনসম্মুখে সঠিকভাবে প্রকাশের জন্য দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো-বৈধ প্রক্রিয়ায় প্রত্যেক নাগরিক জমি ক্রয় করতে পারবেন এটা স্বাভাবিক। সরকারিভাবে অধিগ্রহণকৃত ভূমি ক্রয়ের একটি নিদিষ্ট মানদন্ড প্রক্রিয়া বিবেচনায় নিয়ে ভূমির মূল্য নির্ধারণ সাপেক্ষে টাকার অংকে পরিশোধ করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় সরকারি আমলা তান্ত্রিক কারিকুলামে তা সম্পাদন করা হয়। এখানে ব্যক্তি বিশেষের ভূমিকা প্রাধান্য নয়। জনগণের সুখ-দুঃখের সারথি হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের সৈনিক হয়ে আজকের দীপু মনি, শিক্ষামন্ত্রী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাÐারী। তার বাচনভঙ্গি কর্মদক্ষতা নিজ গুণে গুণান্বিত। তবুও তার প্রতিদ্বন্ধীন্ধীতায় থাকে প্রবল শক্তিশালী ঘরে ও বাহিরে। প্রতিযোগিতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে নিছক অপকৌশলে কাউকে ধরাসয়ী করা যাবে না। কর্মদক্ষতা সততায় সবাইকে একটি অবস্থানে নিয়ে আসে। কাউকে ছোট করে বড় হওয়া দুষ্কর। জেলা প্রশাসনের ভূমিকা একটি জেলা উন্নয়নের গতি পায়। জেলা প্রশাসন আন্তরিক হলে বিন্দুতেই বিষ-বৃক্ষের মূলৎপাটন করতে সক্ষম। সরকারি দায়িত্বশীলদের সম্মানের সাথে জেলার সম্মান ওতপ্রেত ভাবে জড়িত। নিরপেক্ষ সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূমি সংক্রান্ত দুর্নীতির সংবাদের বিহিত সমাধান জনগণ অচিরেই প্রত্যাশা করে। দুর্নীতি হয় বা হয় না এটা হলফ করে বলা যাবে না। তদন্তের শেষ স্বাক্ষর অবদি। এটা সত্য চাঁদপুর জেলা যেভাবে চাঁদপুরের মাটি ও মানুষের নেত্রী ডাঃ দীপু মনির স্বপক্ষে যে প্রতিবাদের জড় উঠছে তা শেষ পর্যন্ত টিকে থাকুক স্বগৌরভে, এটা প্রত্যাশা করছি। সমসাময়িক বাংলাদেশে কোন এমপি-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে এমন স্বতঃস্ফূতভাবে প্রতিবাদ বিরল। স্বাধীনতা পরবর্তী চাঁদপুরে অন্যন্য ইতিহাস।
দুর্নীতি, ষড়যন্ত্র ও হালুয়া রুটির কামড়-কামড়ি, ক্ষমতা দ্বন্ধের রশি টানা-টানি, প্রশাসনিক অনিহায় লালফিতার নিষ্ক্রিয়তায়-প্রশাসনিক ও চলমান কাজের গতি থমকে গেলে আগামীতে অবশ্যই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। আসবে-ই। অপরাধীদের মুখ ও মুখোশ উন্মোচিত হবেই। সুতরাং সাধু-সাবধান। সচেতন নাগরিক সমাজ অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় শোন দৃষ্টি রেখেছে চাঁদপুরের সার্বিক উন্নয়নে-‘অবদানকারী’- এবং বিঘ্ন সৃষ্টিকারীদের। সময়ের সীমারেখায় এর সমুচিত জবাবও পাওয়া যাবে সর্বসাধারণের কাছ থেকে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কান্ডারী স্বগৌরবে রাজনৈতিক অঙ্গনের পর্বতারোহী। যে কোন মূল্যে সকল অপপ্রচার, অপকৌশলের বাধা বিঘœ খন্ডিত করে, আমাদের সন্তানদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ করে দিন। চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট, মেরিন একাডেমি, ডিপ্লোমা ইন ফিশারিজ বর্তমান সরকার ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের দায়বদ্ধতার উপহার। মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম সম্বুকগতিতে পরিচালিত হচ্ছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম সাময়িক বিঘœ হচ্ছে। চাঁদপুর সরকারি কলেজ ও মহিলা কলেজে গবেষণা বিষয়ক বিষয়ের প্রাধান্য দিয়ে যুগোপযোগী শিক্ষা কার্যক্রম সংযোজন, পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজ সরকারিকরণ, চাঁদপুরের উপকন্ঠে আগামীর শহর পর্যাপ্ত ভূমি সমেত চতুর্দিকে যোগাযোগ ব্যবস্থা সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে প্রায় দেড় শতবর্ষী বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজকে সরকারি করণ করে অনার্স কোর্স চালু করণ এখন সময়ের জোরালো দাবী। নতুন নতুন স্বপ্নে বিভোর হয়ে ধর্ম-ক্রিয়া-সংস্কৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, ফায়ার সার্ভিস এবং দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক শিক্ষা কার্যক্রম চাঁদপুরকে নিরাপদ রাখতে সচেষ্ট ও সক্ষম হবে। নদী, পানি, প্রকৃতির উপর বিশ্বমানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সংযোজন করে চাঁদপুরে অন্তর্ভুক্ত করণের প্রচেষ্টায় আত্মনিয়োগ করে চাঁদপুরের মাটি ও মানুষের জনপ্রতিনিধিরা ধাপে ধাপে এগিয়ে যাবেন এই প্রত্যাশা।
শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকের পদচারণায় মুখরিত হোক, ভরপুর থাকুক চাঁদপুরের জনজীবন। চাঁদপুর আগামী প্রজন্মের গর্বের ব্র্যান্ড হোক- শিক্ষা নগরী-চাঁদপুর। কাক্সিক্ষত প্রত্যাশা অমূলক নয়। উন্নয়নের গতিপথের মানুষগুলো জল ও জোসনার বন্ধনে অটুট।