ফাহাদ খাঁন:
ফরিদগঞ্জে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি এক প্রবাসীর স্ত্রী ও এক সন্তানের জননীকে (২৫) ধর্ষণের দায়ে ৪ সন্তানের জনক ধর্ষক জাকির হোসেনকে (৩৫) আটক করেছে পুলিশ। ওই গৃহবধূর দেড় বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। টিকটক লাইকির মাধ্যমে পরিচিত হয়ে প্রথমে মোবাইলে কথোপকথন। এক পর্যায়ে পরকিয়া ও বিয়ের আশ্বাস এবং আবাসিক হোটেল। সর্বশেষ ধর্ষণ মামলা। এমনটাই ঘটেছে এই পরকিয়া প্রেমের ক্ষেত্রে।
গত ২৪ জানুয়ারি সোমবার রাতে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ ওসি (তদন্ত) বাহার মিয়া ও এসআই মশিউর আলম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের গৃদকালিন্দিয়া এলাকা থেকে ধর্ষক জাকিরকে আটক করে। পরে ২৫ জানুয়ারি মঙ্গলবার রাতে ধর্ষিতা ওই গৃহবধূ মামলা দায়ের করেন। ৪ সন্তানের জনক ধর্ষক মোঃ জাকির হোসেন নোয়াখালী জেলার সোনামুড়ী উপজেলার সাতরা এলাকার আবুল কালামের ছেলে।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এক সন্তানের জননী ঐ গৃহবধূর স্বামীর বাড়ি ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নে। স্বামী সৌদি প্রবাসী হওয়ায় সে তার বাবার বাড়ি রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের গৃদকালিন্দিয়ার গ্রামে থাকতো।
প্রায় এক বছর পূর্বে ওই গৃহবধুর সঙ্গে টিকটক লাইকির মাধ্যমে পরিচয় হয় জাকির হোসেনের সাথে। এরপর দুজনেরই মোবাইলে কথোপকথন চলতে থাকে। এরই মধ্যে গত ১৭ জানুয়ারি জাকির হোসেন তাকে বিয়ের প্রলোভনে গৃদকালিন্দিয়া থেকে কৌশলে পাশ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর বাসস্ট্যান্ডের মেসার্স বাবুর আবাসিক হোটেলে নিয়ে যায় এবং সেখানে তাকে দুদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করে।
এরপর ১৯ জানুয়ারি রায়পুর থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জের কদমতলী তালতলা নামক স্থানে একটি অজ্ঞাত বাসায় আটকে রেখে সেখানেও ধর্ষণ করে। পরেরদিন ২০ জানুয়ারি গৃহবধূকে ঐ বাসায় ঘুমে রেখে তার ব্যবহৃত স্বর্ণালংকার নিয়ে জাকির হোসেন পালিয়ে যায়। এসময় জাকির হোসেন তার মুঠো ফোনটিও বন্ধ করে দেয়।
এরই একপর্যায়ে ঐ গৃহবধূ ২০ জানুয়ারি দুপুরে সে তার বাবার বাড়ি রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের গৃদকালিন্দিয়া গ্রামে ফিরে আসে। পরে ঐ গৃহবধূ তার এক ছোট বোনকে দিয়ে জাকির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে কৌশলে ২৪ জানুযারি রাতে জাকির হোসেনকে তাদের বাড়িতে ডেকে আনে। এসময় ঐ গৃহবধূর পরিবারের লোকজন পুলিশকে খবর দেয় এবং ঐ রাতেই পুলিশ অভিযুক্ত জাকির হোসেনকে আটক করে ও গৃহবধূকে পুলিশি হেফাজতে নেয়। পরে রাতেই ঘটনার শিকার ঐ গৃহবধূ বাদী হয়ে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত তদন্ত (ওসি) মোহাম্মদ বাহার মিয়া জানান, গৃহবধূকে ধর্ষণ কথা শুনে আমরা জাকির হোসেনকে কৌশলে আটক করি এবং ওই গৃহবধুর দায়ের করা ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন মামলায় আদালতে প্রেরণ করেছি। এছাড়া ঘটনার শিকার ঐ গৃহবধূকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে।