রহমান রুবেল:
সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় পা ভেঙে যাওয়া ষাটোর্ধ্ব অসহায় ছিন্নমূল চাঁন মিয়াকে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিকল্প আয়বর্ধক হিসেবে একটি চা দোকান করে দেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে সদরের শেখেরহাট বাজার এলাকায় দেয়া দোকানটি আনুষ্ঠানিকভাবে ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
উদ্বোধনের পূর্বে জেলা প্রশাসক বলেন, অসহায় চাঁন মিয়া গত ৩ মাস সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে গিয়ে বসে থাকত। তার একটাই দাবী ছিল আমি ভিক্ষা কিংবা করোর উপর নির্ভরশীল হতে চাই না। আমাকে একটি ছোট দোকান করে দেন। যাতে সেখানে দোকান করে বেঁচে থাকতে পারি। কারণ আমাকে দেখার মত কেউ নেই। এরপর আমরা তাকে বলেছি, তোমার ঘর না থাকলে ঘরে দেই। সে বলেছে আমার ঘর আছে দোকানই প্রয়োজন। তিন মাস অপেক্ষা করেছে কিন্তু সিদ্ধান্ত পাল্টায় নি। এরপর একজন ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে তার অবস্থান দেখে জানালো খুবই করুন অবস্থা। পরে আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার দোকান এবং মালামালও ক্রয় করে দিয়েছি। আজকে থেকে সে দোকান শুরু করতে পারবে এবং আশা করি সে ভালো চলতে পারবে।
ডিসি আরো বলেন, সরকার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ যেন ভাল থাকে, কষ্টে না থাকে। প্রধানমন্ত্রীর সে নির্দেশনাগুলো আমরা বাস্তবায়ন করছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমতিয়াজ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দাউদ হোসেন চৌধুরী, (শিক্ষা ও আইসিটি) মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার, (এডিএম) মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন সারোয়ার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা শাহনাজসহ অন্যান্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ।
নতুন দোকান পেয়ে চাঁন মিয়া বলেন, তার পৈত্রিক বাড়ি সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের সাখুয়া গ্রামে। নদী ভাঙনের শিকার হয়ে সহায় সম্পত্তি সবকিছু হারিয়ে ছিন্নমূল হয়ে পড়েন তিনি। পেশায় রিকশা চালক ছিলেন। পরে সদরের মৈশাদী এলাকায় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ভ্যান চালকের কাজ নেন। এই রোজগার দিয়েই তার সংসার চলতো। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস একবার তার ভ্যানের সাথে সিএনজি চালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে তার হাত পা ভেঙে যায়। এরপর থেকে কাজ করতে না পেরে খুবই অসহায় হয়ে পড়েন তিনি।
তিনি আরো বলেন, কোন ধরণের ভিক্ষাবৃত্তি না করে জেলা প্রশাসনের নিকট আমার অবস্থা তুলে ধরি। এরপর জেলা প্রশাসক মহোদয় আমার প্রতি সদয় হয়ে দোকান করে দিয়েছেন। আমি প্রশাসনের নিকট কৃতজ্ঞ।