সম্পাদকীয়
জাতীয় সম্পদের মধ্যে বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল, জাতীয় ফল কাঁঠাল, জাতীয় মাছ ইলিশ ইত্যাদি ইত্যাদি। জাতীয় সম্পদগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে যে সকল সম্পদ আমরা আহরণ করি সেসবের মধ্যে পাখি কাঁঠাল ইলিশ উল্লেখিত তিনটি বাংলাদেশের আলোচিত সম্পদ। যদিও জাতীয় পাখি দোয়েল নিয়ে আলোচনা থাকলেও সরাসরি আমাদের এটি ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না বা আমরা এটি ব্যবহার করি না। কিন্তু জাতীয় ফল কাঁঠাল বাংলার আনাচে কানাচে প্রত্যন্ত অঞ্চলে উৎপন্ন হয়। এ ফল ভক্ষণ করে যতজন প্রত্যেকেই তৃপ্ত হয় আবার দোয়েল পাখি জাতীয় হিসেবে বাংলার প্রতিটি জনপদে সব সময় দেখা যায় জাতীয় ফুল শাপলা বাংলাদেশের এমন কোন অঞ্চল নেই যেখানে এর দেখা মেলে না। এর জাতীয়তা মানানসই। তাহলে বুঝা যাচ্ছে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের দিকে তাকালেও আমরা যা দেখি তা হল তাদের দেশে যে সম্পত্তি টা সচরাচর জনগণের দেখাশোনা জানার মধ্যে থাকে সহজতর ও প্রাপ্তির মধ্যে থাকে সেটা জাতীয় হলে তাতে কোনো আপত্তি নেই। এমনকি বিশ্বব্যাপী বেশিরভাগ জাতীয় দেশীয় বিষয়গুলো সচরাচর জনগণের নিকট সহজতরও হয়ে থাকে আর যেটা জনগণের কাছে সহজতর হয় চেনা জানা শুনা সেটাই জাতীয় হয়ে আছে। ১৯ জুলাই দৈনিক শপথ পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশে সায়লাব চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছ ঘাট। আহরণ পর্যাপ্ত হলেও মূল্য সাধারণ ক্রেতারা নাগালের বাহিরে। তাহলে ইলিশকে দেশের জাতীয় মৎস্য সম্পদ বলা হচ্ছে। সেই সম্পদ ব্যাপক উৎপাদনের ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ বিরাজমান রয়েছে। এমনকি এই ইলিশের পর্যাপ্ততা বৃদ্ধির জন্য জেলেদের পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে অসময়ে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এমনকি বিশ্লেষক বিশেষজ্ঞ এবং মৎস্য অধিদপ্তরের চৌকস কর্মকর্তাদের তথ্য বিশ্লেষণে যেটা দেখা যায় সেটা হলো এই বছরে এত এত এত টন ইলিশ উৎপাদন হবে কিন্তু উৎপাদনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় যে ব্যয় হয়ে থাকে সেই হিসেবে উৎপাদিত মাছ সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে থাকে সেটাকে আমরা জাতীয় বলি কিভাবে? তাহলে আমাদের দেশীয় ইলিশ জাতীয় মাছ হইয়াছে কি বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য। এই ইলিশ মাছ রপ্তানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের কার্যক্রম পরিচালনার চলছে কিন্তু জাতীয় সম্পদ হিসেবে খ্যাত ইলিশ মাছ সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে বাজারে সায় লাভ হবে কবে। যদি সাধারণ ক্রেতাদের কাছে ইলিশের পর্যাপ্ততা এবং সহজতর কেনা সম্ভব না হয় তাহলে দেশের এই সম্পদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এত কিছু বিধিনিষেধ প্রয়োজন কিসের। স্বাদে গন্ধে মাছের রংগে এই ইলিশের কদর বিশ্ববাজারে প্রশংসিত। যে সম্পদ নিজের দেশের সাধারণ জনগণের চাহিদা মেটাতে পারে না কিংবা সাধারণ জনগণ ক্রয় করতে পারে না সেই সম্পদ জাতীয় হিসেবে ঘোষণা দেয়া বেমানান। তাই সমগ্র বাঙালি জাতির বাংলাদেশ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত এই মাছের স্বাদ গন্ধ সহজতরভাবে সাধারণ জনগণ ক্রয় করতে না পারলে রপ্তানি করার প্রশ্নই আসে না। দেশের জাতীয় সম্পদ দেশের মাটির মানুষেরা আয়েশ করে খেতে পারবে না আর বৈদেশিক অর্থ উপার্জন করার জন্য রপ্তানি করে করে দেশে উৎপাদিত পণ্যকে উচ্চমূল্যের করে রাখার পিছনের রহস্য উদঘাটন করতে হবে। আর তাও উদ্ঘাটন করে বাংলাদেশ জনগণের সম্পদের জনগণের সঠিক হিস্যা জনগণকে বুঝিয়ে দিয়ে তারপরে রপ্তানির জন্য কাজ চালাতে হবে। জাতীয় সম্পদ সমগ্র দেশীয় মানুষের মাঝে ক্রয় ক্ষমতার মাধ্যমে রেখে জাতীয় মাছ ইলিশ এর জাতীয়তাকে সম্মানের মানদন্ড স্থাপন করতে হবে।