নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইমরান ফরহাদ টিটু। বয়স পয়তাল্লিশ। কচুয়া উপজেলার হযরত শাহ নেয়ামত শাহ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৭ সালে দ্বিতীয় বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। কচুয়া উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন কোয়া গ্রামের আবুল বাসারের ছেলে সে। তিন ভাই দুই বোন। ডিসি অফিস, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, পলি টেকনিক্যাল ইনষ্টিটিউটসহ আট থেকে দশটি চাকুরিতে আবেদন করেছেন টিটু। কিন্তু সোনার হরিণ চাকুরি মেলেনি। চাকুরি না হওয়ায় বসে না থেকে একসময় ফার্মেসি ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু তাও বেশি দিন করেননি। ব্যবসার দায়িত্ব ছোট ভাইকে বুঝিয়ে দিয়ে এখন তিনি একনিষ্ঠ কৃষক। আর ধান চাষ করেই চলে তার বছরের খোরাকি।
কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশাপাশের সকলের পরিচিত অতি সাদাসিধে টিটুর সাথে সম্প্রতি কথা হয় সাপ্তাহিক শপথ এর এ প্রতিবেদকের সাথে। তবে আক্ষেপের সুরে টিটু বলেন, টাকা নাইতো চাকুরি নাই। রিটেন থাকলে ভাইবা নাই, ভাইবা থাকলে টাকা নাই। তাই এখন জমি চাষ করি। গরু পালন করি। প্রতিবছর একটি গরু ঘরোয়া বা প্রাকৃতিক উপায়ে মোটাতাঁজা করি। তারপর কোরবানি ঈদে বিক্রি করি।
চার মেয়ের জনক টিটু। বড় মেয়ে ফাতেমা আক্তার ইরা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। সবচেয়ে ছোট মেয়ের নাম খাদিজা বিনতে ইমরান। বয়স ছয় মাস।
এতো পেশা থাকতে কৃষি পেশাকে কেনো বেছে নিলেন জানতে চাইলে টিটু বলেন, প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্যে জনগণকে কৃষি কাজ ও গৃহপালিত পশু পালনের জন্যে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। সে অনুপ্রেরণার জন্যে রাষ্ট্রের উন্নয়ন কাজে লেগে পড়েছি। কৃষি কাজ করি প্রায় ১০ বছর।
দেশের গন্তব্যপথ কোন দিকে যাচ্ছে এমন প্রশ্নে টিটু বলেন, এখনতো আমাদের কারো ভিক্ষা করতে হয় না। চাল নেই, খাবার নেই, এমন হাহাকারও নেই। অর্থনীতির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। আগে মানুষের টিনের ঘর, ছনের ঘর ছিলো। এখন বহুতল ভবন হচ্ছে। দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়াতে উন্নয়ন অনেক বেশি হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ভালো সরকার। রাষ্ট্রের উন্নয়নে সবসময় সজাগ।
সরকারের কোন ভুল আপনার দৃষ্টিগোচর হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরান ফরহাদ টিটু বলেন, সরকারের ভুল বলতে…। না থাক! সমস্যা হবে তাই কিছু বলবো না।
৯০ এর গণআন্দোলন থেকে রাজনীতি করছেন টিটু। আওয়ামী লীগের কর্মী হয়ে মিছিল মিটিং করেছেন। তাই ৮নম্বর ইউনয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছিলো। এখনও কচুয়া পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মানিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
দলের কাছে কোনো চাওয়া পাওয়া আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, দলের কাছে কোনো চাওয়া নাই। দল যেনো ভালো করে, ভালো থাকে এটাই আমার চাওয়া। আমি দলের হয়ে জনগণের সেবা করত চাই। যদিও সে ক্ষমতা আমার হবে কিনা আল্লাই ভালো জানেন। আমি দলের সেবক হয়ে থাকতে চাই। আমার নেতা হওয়ার ইচ্ছা নাই। শুধু কর্মী হয়ে থাকতে চাই। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি করেছি, কিছু চাইনি এমনকি পাওয়াও হয়নি।
টিটু দেশ নিয়ে ভাবনার কথা জানতে চাইলে বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষ যেন স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত না হয়। প্রতিটি মানুষ যেন তার অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়। আমরা এখনো শতভাগ স্বাস্থ্যসেবা পাই না। ডাক্তাররা বেশির ভাগ সময়ই বিভিন্ন প্যাথলজিতে থাকে।
টিটু আরো যোগ করে বলেন, দেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখি। একদিন আমার সোনার বাংলাদেশ বিশে^ উন্নত দেশ হবে। তবে দেশের মেধা যদি পাচার না হয়। জনগণ ভালো থাকলে রাষ্ট্র ভালো থাকবে- এটাই আমার বিশ্বাস।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে ইমরান ফরহাদ টিটু বলেন, ধন্যবাদ জানাবো প্রধানমন্ত্রীকে। দেশ পরিচালনাসহ সব কিছুই আমার ভালো লেগেছে। দেশের সকল সমস্যা খুব দক্ষতার সাথে তিনি সমাধান করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে একবার দেখা করার খুব ইচ্ছে আছে। যদি আল্লাহ সুযোগ দেয়। তবেই আমি তৃপ্ত হবো।