বিল্লাল ঢালী:
সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুর যখন করোনা আতঙ্কে তটস্থ। প্রশাসন যখন মানুষকে ঘরের রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। দিনমজুর খেটে খাওয়া আর হতদরিদ্র মানুষের জন্যে প্রশাসন যখন অস্থির ঠিক তখন সরকারি ভূমি দখলের সর্বোচ্চ পাঁয়তারা করছে একটি চক্র। শুধু পাঁয়তারা বললে ভুল হবে। সরকারি ভূমি অবৈধ দখলে সক্রিয় হয়ে উঠেছে দুষ্ট চক্র। আর এ দখল চলছে শহরের আশপাশে। বিশেষ করে রেলওয়ের ভূমি দখল করছে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে। শুধু কি তাই, ট্রাক রোডে ডাকাতিয়া নদী রক্ষায় অবৈধ ইট বালুর ব্যবসা উচ্ছেদ করা হলেও সেখানে এখন ব্যবসা আরো বেশি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। এছাড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের ভূমিও দখল করেছে কেউ কেই। কেউ কেউ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে সরকারি সড়ক সুরুঙ্গ করেছে। যদিও প্রশাসনের বাধার মুখে সুরুঙ্গ করা বন্ধ করেছে। এহেন কা- দেখে স্থানীয়রা এক প্রকার আতঙ্কে রয়েছে। প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট বাজারে জেলা পরিষদের নির্ধারিত দোকানের জায়গা দখল করে দোকান সম্প্রসারিত করতে দেখা গেছে। বাবুরহাট-মতলব সড়কের বাবুরহাট বাজারের মাথায় জেলা পরিষদের দোকানের সামনে রাতের আঁধারে দোকান তৈরি করেছে কবির মিজি। এবিষয়ে চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগ থেকে আপত্তি দেয়া হলেও দোকান নির্মাণে কোনো অন্তরায় হয়নি। বরং তারা ইতোমধ্যে দোকানের পিলার ও ছাদ ঢালাই করে ফেলেছে। টিনের বেড়া দিয়ে নিচের সকল কাজ প্রায় সম্পন্ন। সুযোগ মতো দোতলার কাজও শেষ করবে। তথ্য পেয়ে চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগরে সড়ক পরিদর্শক মোঃ নাসির উদ্দীন দখলের স্থান পরিদর্শন করেন এবং কাজ না করার নির্দেশ দেন। তারপরেও কাজ শুরু করে গোপনে রাতের আঁধারে। এভাবে কয়েক দফায় নিষেধ করা সত্ত্বেও তারা কাজ করে ফেলেছে। তাছাড়া করোনার কারণে এমন দখলের বিরুদ্ধে খুব বেশি কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের সার্ভেয়ার মারুফ হোসেন জানান, সরকারি ভূমিতে দোকান তোলার খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দোকান নির্মাণ বন্ধ রাখার জন্যে নির্দেশ দেই। কিন্তু তারা তা শোনেনি। এখন থানায় বিষয়ে অভিযোগ দেয়া ছাড়া উপায় দেখছি না।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার (ওসি তদন্ত) হারুনুর রশিদ জানান, সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব । কিন্তু সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা দায়িত্বশীল কেউ অভিযোগ না করলে আমরা ব্যবস্থা নিতে সমস্যা হয়।
এছাড়া চাঁদপুর ওর্য়ালেছ মোড় থেকে রেলক্রসিংয়ের সাথে বাংলাদেশ রেলওয়ের জায়গা দখল করে বেশ কয়েকটি দোকান নির্মাণ শুরু করেছে স্থানীয় নাসির খান। ইতোমধ্যে টিনের বেড়ার আড়ালে পিলার তৈরি করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে দুষ্ঠচক্র রাতের আঁধারে কাজ করে। শুধু তাই নয়, দোকান নির্মাণের স্থানে পূর্বেই টিন দিয়ে বাউন্ডারী তৈরি করে রেখেছে। যেন কেউ তা বুঝতে না পারে।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু সড়কের সু-কৌশলে চলছে লেকের পাড় দখলের চেষ্টা। কেউ লাইলন জাল দিয়ে বেড়া দিচ্ছে। কেউ কেউ গাছ লাগিয়েছে। কেউ বা ময়লা আবর্জনা ফেলার সুযোগ করে দিয়ে দখলের উৎসবে মেতে উঠেছে। মিশন রোড এলাকায় মাটি ফেলে লেকের পাড়া ভরাট করতে দেখা গেছে। যদিও স্থানীয়রা বলছে, পাশেই ভবন নির্মাণ করায় অতিরিক্ত মাটি লেকের পাড়ে ফেলা হয়েছে। পরে সুযোগ মতো মাটি সরালে ভালো, না সরালে আরো বেশি ভালো হরে। সুযোগ দোকান উঠবে। দখল নিশ্চিত হবে।
মুঠোফোনে এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের দক্ষিণাঞ্চলের কানুনগো কাউছার আহমেদ জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে বেশ কিছুদিন চাঁদপুরে যাওয়া হয়নি। আমি খবর নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবো। কিন্তু গত একসপ্তাহ ফেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।
এ বিষয়ে দখলকারীদের সাথে বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ করা হলে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আজ,
বুধবার , ৪ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ , ১৯ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।