দৈনিক শপথ রিপোর্ট:
স্কুল জীবনেই ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়া। এরপর ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে দায়িত্ব পালন। সর্বশেষ ২০০৪ সাল থেকে ঝিমিয়ে পড়া চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগকে সচল ও চাঙ্গা করে তোলতে যার অপরিসীম ভূমিকা। চাঁদপুরের রাজনীতিতে যে ক’জন ক্লিন ইমেজের নেতা রয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম নাম ফেরদাউস মোর্শেদ জুয়েল। তাকে কোয়াক করে ২০১৯ সালে চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। এর পরপরেই রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরু করে আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগ। নির্জীব চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগকে চাঙ্গা করে তোলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তিনি। এরআগে চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নাম কায়েস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলো। সাংগঠনিক ভাবে জুয়েল সক্রিয় হতেই দলীয়, সাংগঠনিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে সতেজ হয়ে উঠে চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ। এ যেন মৃত বৃক্ষে নতুন প্রাণের সঞ্চার। এরপর থেকেই চাঁদপুর শহরের আরো অনেক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ব্যানারে রাজনীতি করতে সক্রিয় হয়ে উঠেন। এক সময়ের নামকায়েস্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্বে আসতে এখন জোড় চেষ্টা তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকেই।
যদিও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে অন্যতম নাম ফেরদাউস মোর্শেদ জুয়েল। তার সময় সাময়কি রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতায় অন্যতম তিনি। যোগ্যতার দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে আরো দুই তিনজন রয়েছেন। তবে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী সমর্থকদের দাবি পুরোনা যারা স্বেচ্ছাসেবক লীগের তেজদীপ্ত ভাব ধরে রাখতে পারেনি তাদের যেন কোনো ভাবেই সংগঠনের নেতৃত্বে দেয়া না হয়। প্রয়োজনে নবীন প্রবীনের সমন্বয়ে কমিটি করা হয়।
ফেরদাউস মোর্শেদ জুয়েল চাঁদপুর শহরের জোড়পুকুর পাড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এড. মকবুল আহমেদের ছোট ছেলে। মা হাজী বেগম শাহিদা আহমেদ। তিন ভাই দুই বোন। ভাইদের মধ্যে সবার ছোট জুয়েল। ১৯৯৪সাল স্কুল জীবন থেকে ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত হন। ১৯৯৫ সালে এসএসসি পাসের পর চাঁদপুর সরকারি কলেজের বাণিজ্য বিভাগের ক্লাস কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ৯৭সালে চাঁদপুর শহর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর একে একে জেলা ছাত্রলীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে বিকম পাস করেন তিনি। তারপর দীর্ঘদিন দলের পদ পদবী ব্যবহার না করেই রাজনীতির মাঠে সরব ছিলেন ফেরদাউস মোর্শেদ জুয়েল। তবে একসময় মানুষের জন্যে কাজ করার তীব্র মনবাসনা নিয়ে আবার সক্রিয় হয়ে উঠেন তিনি। সবশেষ ২০১৯ সালে কোয়াক করে তাকে চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়।
মুক্তিযোদ্ধা পারিবারের সন্তান জুয়েলের মেঝ ভাই কলেজ ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। বড় ভাই পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
ফেরদাউস মোর্শেদ জুয়েল তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দৈনিক শপথ-কে বলেন, ২০১৯ সালে স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হওয়ার পর থেকেই দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচি, নির্বাচনে সাংগঠনিকভাবে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছি। করোনকালীন সময়ে সেবামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছি। আমাকে কেন্দ্র থেকে সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগকে সাংগঠনিক ভাবে আরো শক্তিশালী করে তোলবো। তবে এক্ষেত্রে সিনিয়র কাউকে কমিটির সভাপতি করা হলে আমি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতে সার্বিক প্রস্তুত আছি। আমি মনে করি, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাথে সম্পৃক্ত থেকে কাজ করতে বেশি সুবিধা। কারণ রাজনীতির আসল উদ্দেশ্যই হলো মানুষের জন্যে স্বেচ্ছায় কাজ করা।
কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ এবং সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু নেতৃত্বে আসার পর প্রকৃতিক সংকটে সারাদেশে যেভাবে ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে কৃষকের ধান কেটে দেয়া, সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ এবং ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স সেবা দেয়া ছিলো দৃষ্টিতে কাড়ার মতো। তেমনি ভাবে আমরাও চাঁদপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগকে মানুষের জন্যে সক্রিয় করতে চাই বলে আশা ব্যক্ত করেন ফেরদাউস মোর্শেদ জুয়েল।
প্রসঙ্গত, তিন মাসের চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি ১৬বছর পার করার পর চলতি বছরের গত ১১জনু এ কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক আজিজুল হক আজিজ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে। ২০০৪ সালে এসএম জয়নাল আবেদিনকে আহবায়ক ও এমএ হাসান লিটনকে সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক করে ৭১সদস্য বিশিষ্টি চাঁদপুর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তাদেরকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে ৩ মাস সময় বেঁধে দিলেও ১৬ বছর পাড় হলেও গঠন করতে পারেনি পূর্ণাঙ্গ কমিটি। চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে অচিরেই নতুন কমিটির ঘোষণা আসতে পারে।