চাঁদপুর প্রতিনিধি:
চাঁদপুরে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করলেন বিষ্ণুদী আজিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম। বুধবার বিকেলে তিনি স্কুল ভবনের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে তিনি বিষাপন করে আত্মহত্যা করেন। তিনি ২০২০ সালের পহেলা জানুয়ারি উক্ত বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। নিহত রফিকুল ইসলাম ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং তার দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে। মৃতদেহের সাথে ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট ও বিষের বোতল উদ্ধার করে পুলিশ।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, শহরের মরহুম আব্দুল করিম পাটোয়ারী সড়কস্থ বিষ্ণুদী আজিমিয়া সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার সকাল ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে কর্মস্থল যান। এরপর দুপুরে পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে একাধিক বার ফোন করা হলেও অপর প্রান্ত থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় যাচ্ছিলো না।
এক পর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা তার খোঁজে কর্মস্থল বিদ্যালয়ে ছুটে যান। সেখানে খোঁজাখুঁজির করে বিদ্যালয়ের ৩য় তলার একটি বন্ধ কক্ষ থেকে মুমূর্ষ অবস্থায় প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামকে উদ্ধার করা হয়। এসময় ঐ রুম থেকে কীটনাশক জাতীয় ৩টি খালি বোতল উদ্ধার করা হয়।
এদিকে তার মৃত্যু নিয়ে ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি হত্যাকান্ড নাকি আত্মহত্যা তা খতিয়ে দেখতে দাবি জানিয়েছেন তারা।
বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নার্গিস আক্তার ও শিক্ষক আলম জানান, সকালে তিনি বিদ্যালয় আসেন এবং বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলমের সাথে প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়ে কাজ করেন। পরে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে কেউ একজন তার সাথে কথা বলতে আসবে বলে আলম স্যারকে তিনি বিদায় করে দেন।
পরে দুপুরের পর পরিবারের লোকজন তাকে মোবাইলে না পেয়ে অনেকের সাথে যোগাযোগ করেন। তাতেও কোন খবর না পেয়ে বিদ্যালয় এসে তার পরে থাকা দেহ দেখতে পান। এসময় তাকে দ্রæত উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেছে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাগর মজুমদার বলেন, হাসপাতালে আনার পর তার পালস ছিলো না। পরে তাকে ঢাকা রেফার করি। কিন্তু ঢাকার উদ্দেশ্যে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আসিফ মহিউদ্দিন জানান, আমরা জানতে পারি বিষ্ণুদী আজিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আমরা ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড-নোট ও বিষের বোতল জব্দ করেছি। মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। তবে তার শরীরে কোন ধরনের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত প্রক্রিয়াধীন।