বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম:
চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের নতুন প্রার্থী ওচমান গণি পাটওয়ারী। চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইউসুফ গাজীর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পর বিদায়ী চেয়ারম্যান ওচমান গণি পাটওয়ারীকেই ফের মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “আমরা ইউসুফ গাজীর পরিবর্তে নতুন করে ওচমান গণি পাটওয়ারীকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছি।”
ওচমান গণি পাটওয়ারী ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের মনোনয়নেই চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার বদলে এবার চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ইউসূফ গাজীকে মনোনয়ন দিয়েছিল আওয়ামী লীগ।
গত ২৩ অগাস্ট এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৭ অক্টোবর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে চাঁদপুর জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্টিত হওয়ার কথা রয়েছে।
কিন্তু এ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান রোববার বিকালে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ইউসূফ গাজীর মনোনয়ন বাতিল করেন।
ওই প্রার্থী চাইলে এ আদেশের বিরুদ্ধে আগামী তিন দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন বলে জানিয়েছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। ইউসুফ গাজীও সাংবাদিকদের আপিল করার কথা বলেছিলেন। তবে আওয়ামী লীগ তার আগেই দলীয় সমর্থন বদলে দিল।
বিদায়ী চেয়ারম্যান ওচমান গণি পাটওয়ারী আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে মামলা সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আনার পর নির্বাচন কমিশন শুনানি শেষে প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায়।
অভিযোগে বলা হয়, প্রতারণার অভিযোগে ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে ২০০৪ খুলনার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেন হুমায়ুন কবির নামে এক ব্যক্তি। ওই মামলায় আদালত আসামিকে খালাসের রায় দিলেও ২০০৮ সালে ওই রায়ের বিরুদ্ধে খুলনা দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন বাদী।
আপিল শুনানি শেষে ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১১ সালের ৫ অক্টোবর পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদÐ, পাঁচ হাজার টাকা অর্থদÐ এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদÐ দেওয়া হয়।
ইউসুফ গাজী উচ্চ আদালতে আপিল করলে হাই কোর্ট পাঁচ বছরের সাজা ও অর্থদÐ বহাল রাখে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ইউসুফ গাজী ২০১৯ সালে লিভ টু আপিল করেছে, যা এখন শুনানির অপেক্ষায়।
জেলা পরিষদ আইনের ২০০০ এর ৬(২) ঘ ধারা অনুযায়ী ‘নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে কোনও ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদÐে দÐিত হলে তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার যোগ্য হবেন না।
সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
পেছনের পাতায় দুই কলামে। ছবি-১১
মেঘনা ধনাগোদা নদী থেকে বালু উঠিয়ে স্কুলের জায়গা ভরাটের বিষয়টি জানেন না কেউই
সুমন আহমেদ
সম্পূর্ণ অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে স্কুলের জায়গা ভরাটের বিষয়টি জানেন না প্রসাশনের কেউ। দুর্গাপুর জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের নিচু জায়গা ভরাটের কাজে মেঘনা-ধনাগোদা নদী থেকে বালু উত্তোলনের পক্রিয়ায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষক নিজেদের মনগড়া কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এ ক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসন এমনকি জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানও অবগত নন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার সূত্রধর ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আল আমিন ভুলভাল তথ্য দিয়ে ঘটনার সত্যতা আড়াল করার অনৈতিক চেষ্টার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের দায়ভার ড্রেজার মালিকের উপর চাপিয় দেয়ার অনৈতিক উপায় অবলম্বন করছেন বিদ্যালয় কমিটি। তবে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। এদিকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথও এ ঘটনায় কোন তথ্য জানেন না বলে নিশ্চিত করেছেন। মেঘনা-ধনাগোদা নদী থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে স্কুলের জায়গা ভরাটের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল হাসানেরও জানা নেই বলে তিনি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মতলব উত্তরের দুর্গাপুর জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি নিচু জায়গায় ভরাট করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
ম্যানেজিং কমিটির সভায় জায়গাটি ভরাটের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ড্রেজার মালিকের মাধ্যমে ভরাট করাতে শুরু করেন বলে জানিয়েছিলেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আল আমিন। তবে কোন প্রক্রিয়ায় মেঘনা-ধনাগোদার তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের নাম ব্যবহার করেন তিনি।
এদিকে প্রতি ঘনফুট বালুর মূল্য ৫ টাকা ৮০ পয়সা করে ড্রেজার মালিককে প্রদান করার কথা স্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার সূত্রধর।