বিল্লাল ঢালী:

জেলায় করনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। জেলার মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলা করোণা আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। শুধু সদর উপজেলাতেই এপর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৫৭ জন। যেখানে চাঁদপুর জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা মোট ৪১৩ জন।
চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মো. সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, জেলায় এ পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২ হাজার ৯শ৫০ টি। রিপোর্ট এসেছে ২ হাজার ৪শ৯০টি। রিপোর্ট অপেক্ষমাণ ৪শ ৬০ টি। পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ৩শ৯৯ টি। এরমধ্যে দুইজনের পরীক্ষায় দ্বিতীয়বার পজেটিভ এসেছে। বাকি ২ হাজার ৯১ টি রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।জেলায় এই পর্যন্ত চিকিৎসাধীন রোগী ৩০১জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৮, ঢাকায় রেফার করা হয়েছে ৪ ও হোম আইসোলেশনে আছে ২শ৭৯ জন। এই পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন ৮০জন। মৃত্যুর বরন করেছেন ৩২ জন।
এই পর্যন্ত আইসোলেশনে রোগীর সংখ্যা ১৭৭জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়প্রাপ্ত হয়েছেন ১৫৩জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রোগী সংখ্যা ২৪জন। এর মধ্যে কোভিড-১৯: ১৮জন, নন কোভিড: ৬ জন।
তিনি আরো জানান, জেলায় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যাক্তির সংখ্যা ৪৯০৫ জন। ছাড়প্রাপ্ত হয়েছেন ৩৬৯১জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ১২১৪ জন।
চাঁদপুর জেলায় করোনা আক্রান্ত ৪১৩ জনের মধ্যে ৩৯৯ জন রোগী চাঁদপুরে সনাক্ত।উপজেলাভিত্তিক পরিসংখ্যান হলো : চাঁদপুর সদরে ১৫৭জন, ফরিদগঞ্জে ৪৯জন, হাজীগঞ্জে ৪৯জন, মতলব দক্ষিণে ৩৮জন, শাহরাস্তিতে ৪৮ জন, কচুয়ায় ২৮ জন, মতলব উত্তরে ১৯ জন ও হাইমচরে ২৫ জন। বাকিদের মধ্যে ৪জন ঢাকা, ০২ লক্ষ্মীপুরে, মতলব দক্ষিণ আইসিডিডিআরবি হতে প্রাপ্ত ৮ এবং কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হতে ১ এবং নারায়ণগঞ্জ থেকে আগত ১ জন আক্রান্ত হয়ে চাঁদপুরে এসেছে।
এছাড়া জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী ৩২ জনের উপজেলাভিত্তিক পরিসংখ্যান হলো : চাঁদপুর সদরে ১০ জন, কচুয়ায় ৪জন, ফরিদগঞ্জে ৪জন, মতলব দক্ষিণে ১, হাজীগঞ্জে ৭ জন, মতলব উত্তরে ২জন ও শাহরাস্তিতে ৪জন।
জেলার বিভিন্ন থানায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ২৪ জন পুলিশ সদস্য করোনা আক্রান্ত হন।আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন সদর থানায় ৮ জন, হাইমচর থানার ৪ জন, কচুয়া থানার ২ জন, শাহরাস্তি থানার ২ জন, সদরের একজন ট্রাফিক পুলিশ, পুলিশ লাইনসের ৪ জন, জেলা পুলিশ হতে নৌপুলিশে প্রেষণে কর্মরত একজন এবং হাজীগঞ্জ উপজেলায় ২ জন। এদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১২ জন। আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১২ জন পুলিশ সদস্য।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় চাঁদপুর জেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছিল।জেলা প্রশাসকের তথ্যমতে, জেলায় সরকারি ভাবে ৮ এবং বেসরকারিভাবে ২০ টি চিকিৎসাকেন্দ্র প্রস্তুত আছে। জেলায় মোট ৭৭৩ টি বেড প্রস্তুত আছে রোগীদের জন্য। এরমধ্যে সরকারিভাবে ৫৪৩ টি এবং ২৩০ টি বেড প্রস্তুত আছে বেসরকারীভাবে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় প্রস্তুত আছে সরকারিভাবে ৭৫ এবং বেসরকারিভাবে ২৩ টি বেড। ভাইরাস মোকাবেলায় জেলায় এ পর্যন্ত প্রস্তুত রাখা হয়েছে সরকারিভাবে ২০৪ জন ডাক্তার এবং বেসরকারী ভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৪৩ জন ডাক্তার। এছাড়াও রোগীদের সেবায় সরকারিভাবে ২৪৯ জন নার্স এবং বেসরকারিভাবে প্রস্তুত আছে ৪৩ জন নার্স।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় চাঁদপুর জেলায় এ পর্যন্ত ৭৬ হাজার ১৭৮ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে যার পরিমাণ ৩০৪৭ দশমিক ১৩০ মেট্রিক টন। জেলায় ৩০ হাজার ৮শ ৫টি পরিবারকে নগদ অর্থ ১ কোটি ৫৪ লাখ ২ হাজার ৬৬১ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় জেলায় এখন পর্যন্ত মজুদ আছে ৩৫১ দশমিক ৭৪০ মেট্রিক টন চাল ১০১ বান্ডেল ঢেউটিন। তিন লক্ষ টাকার শিশুখাদ্য এবং নগদ অর্থ জমা আছে ৮ লক্ষ ৮ হাজার ৩৩৯ টাকা
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জরুরী চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জেলায় আটটি এম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। চিকিৎসা কেন্দ্রে জরুরি বিভাগে জেলায় কোন আইসোলেশন ব্যবস্থা নেই।