বিল্লাল ঢালী:
আসছে ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে কোরবানীর জন্যে চাঁদপুরে ৭০সহ¯্রাধীক গরু প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে চাঁদপুর জেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়। এবছর কিছু ভ্রাম্যমান খামারী গরু মোটাতাজা না করলেও বিগত বছরের তুলনায় এবারও গরু নেহায়েত কম মোটাতাজা করা হয়নি। তবে বিশেষ করে দেশীয় পদ্ধতিতে জেলার চরাঞ্চলগুলোর প্রচুর পরিমানে গরু কোরবানীর জন্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া এবছর চারশ পরিবারকে সরকারি বিশেষ প্রণোদনার মাধ্যমে প্রায় দুই হাজার গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। এ প্রকল্পটি বিগত কয়েক বছর পর আবার শুরু করেছে সরকার। বিষয়টি জানিয়েছেন চাঁদপুর জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ বখতিয়ার উদ্দীন। চাঁদপুরের চাহিদা পূরণ করে আশপাশের জেলাতেও পশু যোগান দেয়া সম্ভব হবেও জানান তিনি।
চাঁদপুর জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায, এবছর চাঁদপুরে কোরবানীর জন্যে ৭১হাজার ৯শ ৪৩টি গরু প্রস্তুত রেেয়ছে। এরমধ্যে চাঁদপুর সদরে ১২হাজার ৮শ, মতলব দক্ষিণে ৩হাজার ৭শ, মতলব উত্তরে ১০হাজার ২শ আটচল্লিশ, হাজীগঞ্জে ৯হাজার ৮শ সাতচল্লিশ, শাহরাস্তিতে ৮হাজার ৪শ আটচল্লিশ, কচুয়া ১০হাজার পঞ্চাশ, ফরিদগঞ্জে ১২হাজার ২শ, হাইমচরে ৪হাজার ৬শ পঞ্চাশ।
গতবছর চাঁদপুরের স্থায়ী অস্থায়ী সর্বমোট ১৯১টি পশুরু হাট রয়েছে। এবছরও প্রায় সমপরিমান বাজারে এসব পশু বিক্রি করা হবে। তবে মহামারি করোনার কারণে স্থানীয় খামারিরা ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে। ইতোমধ্যে নিয়মিত বাজারগুলোতে অনেক গুরু উঠছে। কেউ কেউ আগেই গরু কেনার প্রস্তুতি নিয়েছে। যদিও এবছর মধ্যবিত্তরা কোরবানী নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে পড়েছে। গত প্রায় চারমাসের করোনা প্রাদূর্ভাবের কারণে ওসব পরিবারগুলোতে তৈরি হয়েছে আর্থিক অনটন। কোরবানীর জন্যে বলা চলে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো অপ্রস্তুত।
নাম প্রকাশে কয়েকজন মাধ্যবিত্তের মানুষ জানায়, এবছর সঞ্চিত টাকাও করোনাকালে খরচ হয়ে গেছে। যে কারণে কোরবানী নিয়ে শঙ্কায় পড়েছি। তবে মাঝারি বা বড় আকারের গরুর চেয়ে মধ্যবিত্তরা তুলনামূলক কম মূল্যে ছোট আকারের গুরু কেনার লক্ষ্য স্থির করেছ।
অপরদিকে ছোট ছোট খামারীরা জানায়, এবছর গরুর সেভাবে যতœ নেয়া সম্ভভ হয়ে উঠেনি। তাই গরু স্বাভবিকের চেয়ে আকারে বা পরিপুষ্ট কম হয়েছে। কিন্তু আর্থিক খরচ কিন্তু কম হয়নি।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ বখতিয়ার উদ্দীন জানান, কোরবানি উপলক্ষে জেলায় পর্যাপ্ত কোরবানি গরু আছে। চাঁদপুরের চাহিদা মিটিয়ে প্রত্যেক বছর অন্যান্য জেলায় রপ্তানি করি। এবারও সে পরিমাণ গরু আমাদের জেলায় আছে। করোনার জন্য আমাদের গরু পালনে কোনো সমস্যা হয়নি। আমাদের বেশিরভাগ গরু পালিত হয় চরাঞ্চল এলাকায়। চরে করোনার তেমন প্রভাব ছিল না। গরু মোটাতাজা করার জন্য যেসব কেমিক্যাল ব্যবহৃত হয় আমাদের জেলায় তা হয়নি। আমরা প্রত্যেক মাসে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি। প্রত্যেক মাসে আমাদের যেখানে সাত থেকে আটটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনার টার্গেট থাকে, সেখানে এবার আমরা মাসে ৭০ থেকে ৮০ টা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি। চাঁদপুরে যে খাদ্য খাওয়ানো হয় তা প্রাকৃতিক । তাই এ এলাকার গরুর চাহিদা বেশি। কোরবানি উপলক্ষে কি হবে জানি না। তবে অনলাইনে গরু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। জেলার বিভিন্ন হাটে গরু বেচাকেনা হচ্ছে। যদি ইন্ডিয়ান গরু না আসে তবে আমাদের খামারিরা যথেষ্ট লাভবান হবে বলে আশাবাদী আমরা। গত বছর গরুগুলোকে ভ্যাকসিন করে রেখেছি। যার জন্য আমাদের চাঁদপুর জেলায় কোন গরু অসুস্থ হয়নি।
প্রসঙ্গত ২০১৯ সালে কোরবানির পশুর চাহিদা ছিলো ৩৫হাজার পশু। এবার তা কম বেশি হতে পারে। গত বছরও ৭০হাজারেরও অধিক পশু কোরবানীর জন্যে প্রস্তুত ছিলো।