সাগর আচার্য্য:
চাঁদপুরে এখন নিত্যই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। মানুষ ঘরের বাইরে বের হলেই এখন আতঙ্কে থাকতে হয়, নিরাপদে আবার ঘরে ফিরতে পারবে কিনা। গত ৭ দিনে জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেছে ৮ জনের। আহত হয়েছেন অনেকে। নিহতদের মধ্যে ৫ জনই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। বাকী তিন জনের একজন হচ্ছে স্কুল শিক্ষিকা, একজন সিএনজি চালক ও অন্যজন সিএনজি যাত্রী। বস্তুত সড়ক দুর্ঘটনা এখন আর নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয়। এটা দুর্যোগের পর্যায়ে চলে গেছে।
সড়ক দুর্ঘটনা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ও মর্মান্তিক। সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে বিভিন্ন বয়স ও পেশার মানুষ। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিদিন মানুষের বুক থেকে কেড়ে নিচ্ছে সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিকে। আত্মীয়-স্বজন, মেধাবী লােক, প্রিয় ব্যক্তিত্ব অনেকেই হারিয়ে যাচ্ছেন সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে।
এ সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ হচ্ছে সচেতনতার অভাব। আর এ থেকে সৃষ্ট অন্যান্য কারণগুলো হচ্ছে অসতর্কতা, ড্রাইভারদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো, যান্ত্রিক ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি রাস্তায় নামানো, ধারণ-ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই, ত্রুটিপূর্ণ অপ্রশস্ত রাস্তাঘাট, লাইসেন্সের কারচুপি, অদক্ষ চালক দ্বারা গাড়ি চালানো, গাড়ি চালানোর সময় কথা বলা ও ফোন ব্যবহার করা, নেশা গ্রহণ করে নেশাগ্রস্ত হয়ে গাড়ি চালানো, একটি গাড়ি থেকে অন্য গাড়ির গতি ও প্রয়োজনীয় দূরত্ব বজায় না রাখা, ট্রাফিক আইন না মানা ইত্যাদি। অন্যদিকে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় আইন ও শাস্তির বিধান না থাকায় দুর্ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে চাঁদপুর-ঢাকা রুটের পদ্মা প্রিমিও বাসের ড্রাইভার সুমন দৈনিক শপথকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা যেন আমাদের দেশে এখন খুবই স্বাভাবিক এক বিষয় হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে কারও মধ্যে নেই কোনো সচেতনতা ও নিয়মানুবর্তিতা। সড়ক দুর্ঘটনা রোধ যত জটিলই হোক না কেন, সরকার ও প্রশাসনের পাশাপাশি আমরা সবাই এর সমাধানে এগিয়ে এলে ব্যাপক দুর্ঘটনা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। এজন্য সবাইকে সড়কে সতর্কতা অবলম্বন করে চলাচলের পাশাপাশি যথাযথ নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে।
সর্বোপরি সচেতন মহল মনে করেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পথচারী, চালক-মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। মনে রাখা দরকার, একটি সড়ক দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না! এ খাতটিকে মানবিক উন্নয়নের ধারায় ফিরিয়ে আনতে সরকারের যেকোনো ইতিবাচক ব্যবস্থা গ্রহণে যানবাহনের মালিক, চালক ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ও সচেতনতা সবচেয়ে বেশি দরকার।