বিল্লাল ঢালী
চাঁদপুর জেলায় ১১৫ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে সরকারি আধাপাকা ঘর। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে এসব ঘরগুলোতে। নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায় রয়েছে। জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় হস্তান্তর করা হবে তালিকাভুক্ত পরিবারগুলোর মাঝে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছিলেন, মুজিববর্ষে দেশে কোনও মানুষ গৃহহীন থাকবে না। সরকার সব ভূমিহীন, গৃহহীন মানুষকে ঘর তৈরি করে দেবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে চলতি বছরের ১৭ মার্চ থেকে আগামী ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময়কে সরকার মুজিববর্ষ ঘোষণা করে। এই সময়ের মধ্যেই এসব ঘর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে। সরকারের তিনটি কর্মসূচির আওতায় দেশের ভূমিহীন ঠিকানাহীন মানুষদের ঘর তৈরি করে দেওয়ার কাজ করছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের আওতায় দুর্যোগ সহনীয় বাড়ি প্রকল্প। ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতায় গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২।
চাঁদপুরে দুটি প্রকল্পের আওতায় ১১৫ টি ঘরের বরাদ্দ পাওয়া যায়। যার মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের দুর্যোগ সহনীয় বাড়ি প্রকল্প আওতায় নির্মিত হচ্ছে ৩০ টি ঘর। এবং ৮৫ টি ঘর নির্মিত হচ্ছে গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের আওতায়।
ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ খাস জমি দিয়ে ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। দুই কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি আধা পাকা ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা। সবগুলো বাড়ি সরকার নির্ধারিত একই নকশায় হবে। রান্নাঘর, সংযুক্ত টয়লেটসহ অন্যান্য সুবিধা থাকবে এসব বাড়িতে। দুই কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি আধাপাকা ঘর নির্মাণে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা।
চাঁদপুর জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অফিস সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর সদর ৪০, মতলব দক্ষিণ ২৫, মতলব উত্তর ৫, কচুয়া ১৫, শাহরাস্তি ৫, হাজিগঞ্জ ৫ ও হাইমচর ১০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার এ সরকারি ঘর পাচ্ছে। শুধুমাত্র ফরিদগঞ্জ উপজেলায় এখনই গৃহনির্মাণের জন্য উপযুক্ত জমি না থাকায় বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।
চাঁদপুর সদরে নির্মিত ৪০টি ঘরের মধ্যে ১০টি ঘরের কাজ ইতিমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে বাকি ৩০ টি ঘর নির্মাণের ৮০ ভাগ কাজ সমাপ্ত। মতলব দক্ষিণে ২৫টি ঘরের মধ্যে ২টি ঘরের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। বাকি ঘরগুলোর কাজ ৯০ ভাগ সমাপ্ত। মতলব উত্তরে বরাদ্দকৃত ৫টি, কচুয়ায় বরাদ্দকৃত ১৫ টি এবং শাহরাস্তিতে বরাদ্দকৃত ৫টি ঘর নির্মাণ কাজ পুরোপুরি সমাপ্ত হয়েছে। হাজীগঞ্জ উপজেলা বরাদ্দকৃত ৫টি ঘরের নির্মাণকাজ ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। হাইমচর উপজেলা বরাদ্দকৃত ২০ ঘরের মধ্যে ইতিমধ্যে ১০টি ঘর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। বাকি ১০টি ঘরের কাজ ৯০ ভাগ সমাপ্ত। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে তালিকাভুক্ত ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে ঘরগুলো হস্তান্তর করবেন জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ( অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো: ছামিউল ইসলাম জানান, আমরা চাঁদপুর জেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য ১১৫ টি ঘর বরাদ্দ পেয়েছি। ঘরগুলো নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মানুষের মাঝে ঘরগুলো হস্তান্তর করতে। আমাদের হয়তো আর একটু সময় লেগে যাবে। চেষ্টা করছি যত দ্রুত কাজ সমাপ্ত করা যায়। আশা করি জানুয়ারি ২০ তারিখের মধ্যে আমরা ঘরগুলো হস্তান্তর করতে পারবো।