ইকবাল বাহার:
চাঁদপুরে আজ থেকে চালু হচ্ছে ২শ ১টি হাটে কোরবানির পশু বেচা-কেনা। হাটগুলোতে গরু বেচা কেনা চলবে ঈদের দিন (২১ জুলাই) সকাল পর্যন্ত। শুরুতে কোভিড-১৯ এর ব্যাপকতার কারণে সারাদেশে কোরবানির হাট ভার্চ্যুয়ালি হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরেও হাট বসার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
চাঁদপুর স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক বিভাগের সুত্র মতে, চাঁদপুরে ৮টি উপজেলায় ও ৪ টি পৌরসভায় অস্থায়ী গরুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে চাঁদপুর সদরে ২৪ টি, কচুয়ায় ৪৪ টি, ফরিদগঞ্জে ৩৪টি, মতলব উত্তরে ১৫টি, মতলব দক্ষিণে ১৭টি, শাহরাস্তিতে ২১টি, হাইমচরে ১০টি, হাজীগঞ্জে ২১টি, চাঁদপুর পৌরসভায় ৬টি, ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় ২টি, মতলব পৌরসভায় ৪টি, শাহরাস্তি পৌরসভায় ৩টি হাটসহ সর্বমোট ২শ’ ১টি কোরবানি হাট বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চাঁদপুর পৌরসভার ৬টি পশুর হাটের মধ্য রয়েছে স্বর্ণখোলা পশুহাট, ওয়ারলেস বাজার পশুহাট, বাবুরহাট পশুহাট, ওছমানিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন পশুহাট ও রঘুনাথপুর কেজি স্কুল সংলগ্ন পশুহাট।
সরেজমিনে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা গেছে, কঠোর লকডাউন চলাকালেই কোরবানির পশু বিক্রির জন্য জেলার ছোট বড় সকল হাটের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখা হয়েছে। এছাড়াও অনেক ব্যবসায়ী পশু নিয়ে অপেক্ষায় আছে। আবার অনেকেই আশানুরূপ ক্রেতা পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। অন্যদিকে কোরবানির পশুর হাটে বেচা-কেনা এখনও শুরু না হলেও অনলাইনে চাঁদপুরে গত কয়েকদিন গরু ক্রয় বিক্রয় করছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
গত সোমবার এক ভার্চুয়াল সভায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা তথা কোরবানির সাথে অনেক আবেগ-অনুভূতি জড়িত। তাই দুর্যোগ-দুর্বিপাকেও তাকে পরিহার করা সম্ভব হয় না। তিনি আরো বলেন, এ বছর করোনার প্রাদূর্ভাব বেশি থাকার পরেও মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যদিও কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের একমুখী চলাচল অর্থাৎ প্রবেশপথ এবং বহির্গমনের পৃথক করা, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা ক্রেতা-বিক্রেতা প্রত্যেকের তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র এবং হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত বেসিন, পানি ও জীবাণুনাশক সাবান রাখার নির্দেশনা দেন মন্ত্রী।
অন্যদিকে গত সোমবার (১৩ জুলাই) দুপুরে মৎস্য এ প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার সারাদেশে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়ে অনলাইন প্লাটফর্ম চালু করেছে। খামারি ও পশু ক্রেতাদের অনুরোধ করা হয়েছে অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে পশু বেচা কেনার জন্য।
চাঁদপুর স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক বিভাগের সূত্র বলছে, করোনা সংক্রমণের বিষয়টি মাথায় রেখে এবার বাজার ব্যবস্থাপনায় নতুন কয়েকটি শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। হাটে হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক সাবান রাখতে হবে। গায়ে জ্বর থাকলে কাউকে হাটে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। হাটে প্রবেশকারীকে গ্লাভস, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে প্রবেশ করতে হবে। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা না ফেলে একটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখতে হবে। এছাড়া হাটে প্রবেশ ও ত্যাগের জন্য পৃথক গেট করতে হবে। নির্ধারিত সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হাটে প্রবেশ ও ত্যাগ করতে হবে। বয়স্ক, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তিরা যাতে হাটে প্রবেশ করতে না পারেন সেই বিষয়টি ইজারাদারদের নিশ্চিত করতে হবে। এসব শর্ত না মানলে ইজারা বাতিলও হতে পারে।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা মাজিস্ট্রেট অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, কোরবানির হাট ভার্চ্যুয়ালি হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে হাট বসার অনুমতি দেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে অনলাইনের পাশাপাশি চাঁদপুরে মোট ২শ’ ১টি কোরবানির পশুর হাট বসার অনুমতি দেয়া হয়েছে।