ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে এ দুর্যোগ মোকাবেলায় জরুরি ভিত্তিতে নগদ ২ কোটি ৫৯ লাখ ৫শ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১০২ মেট্রিক টন চাল, ১৭২ ব্যান্ডেল টিন, শিশুখাদ্য ও গো-খাদ্যের ১৮ লাখ টাকা মজুদ রাখা হয়েছে। ৮টি উপজেলায় ৩২৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রায় ২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে।মঙ্গলবার দুপুরেঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় চাঁদপুর জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। জুম অ্যাপের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। সভায় অন্যান্যদের মাঝে সভায় কৃষি, খাদ্য, বিদ্যুত, জনস্বাস্থ্য, পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা আওয়ামীলীগ, প্রেস ক্লাব, জেলা পরিষদ, মৎস্য,স্কাউট, সকল এনজিও, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, এাণ,ফায়ার সার্ভিসসহ সকল উপজেলার ভিাগীয় উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ অংশ গ্রহণ করেন।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় আয়োজিত জরুরী এ সভায় জানানো হয়, জেলায় এই দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে নগদ ২ কোটি ৫৯ লাখ ৫শত টাকা, ১০২ মেট্রিক টন চাল, ১৭২ ব্যান্ডেল টিন, শিশুখাদ্য ও গো-খাদ্যের ১৮ লাখ টাকা মজুদ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া জেলার ৮টি উপজেলায় ৩২৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রায় ২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত আছে।
এছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও প্রতিটি উপজেলায় জরুরি নিয়ন্ত্রন কক্ষ খোলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় আয়োজিত এ সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিদ্ধান্ত গুলোর মধ্যে রয়েছে, জেলাস্থ নদী তীরবর্তী উপজেলা হাইমচর, চাঁদপুর সদর, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণসহ ৮ টি উপজেলারই বিভিন্ন চরাঞ্চলে মাইকিং করে দূর্গত এলাকা থেকে সাধারণ জনগণকে নিরাপদ স্থানে ও আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নেয়ার আহ্বায়ন জানানো। করোনা মহামারীকালীন এই ঘূর্ণিঝড়ে করোনা যাতে ছড়াতে না পারে, সে জন্য বিশেষায়িত আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও সকল স্কুল- কলেজ- মাদ্রাসা সমূহকে অস্থায়ীভাবে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা। নৌ-পুলিশ, কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম চালুসহ জরুরী চিকিৎসার প্রয়োজনে মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার এবং বল্কহেড, ড্রেজার ইত্যাদি ছোট নৌযানগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলার জন্য মঙ্গলবার (২৫ মে) দুপুরের পর থেকে চাঁদপুর থেকে যাত্রীবাহী লঞ্চসহ সকল ধরণের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডাব্লিউটিএ। এছাড়া জেলা প্রশাসক ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার তথা জনসাধারণকে ক্ষতি নিরোপন করে নিয়ম অনুসারে ত্রাণ ও আর্থিক সাহায্য অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেন মর্মে সিদ্ধান্ত হয়।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলা প্রস্তুতি বিষয়ে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ দৈনিক শপথকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুতিসভা করেছি। সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী প্রস্তুতি হিসেবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য উদ্ধার টিম, স্বেচ্ছাসেবক টিম, মেডিকেল টিম, পর্যাপ্ত খাদ্য সামগ্রী মজুদসহ নানা বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি যদি ঘূর্ণিঝড় আমাদের অঞ্চলের উপর বয়ে যায়ও আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে সক্ষম হব। আমাদের সকল প্রকার প্রস্তুতি নেওয়া আছে।
দৈনিক শপথ রিপোর্ট