সাগর আচার্য্য:
চাঁদপুরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আবারও বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। তারপরও স্বাস্থ্যবিধি মানতে নারাজ সাধারণ মানুষ। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। অধিকাংশ যাত্রীর মুখে নেই মাস্ক। আবার যে কয়েকজনের আছে তাদের অনেকে মাস্ক নামিয়ে রাখছে থুতনিতে। আবার কারোটা দুলছে দুই কানে। কেউ কেউ মুখ ঢাকছেন তো নাক খোলা, কারোটা ঠাঁই পেয়েছে পকেটে। স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণ মানুষের এমন উদাসীনতা ডেকে আনতে পারে মারাত্মক বিপদ।
করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত ১১ দফা বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়েছে গত বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে প্রয়োজনে আইন প্রয়োগ করে শাস্তি নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে। বাস্তবে বিধিনিষেধের বালাই নেই কোথাও। শাস্তি তো দূরের কথা, কেউ বিষয়টি মনিটরিং করছেন বলেও মনে হচ্ছে না।
গতকাল মঙ্গলবার চাঁদপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে আসা ক্রেতা সাধারণ বা দোকানদার কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। মাস্ক বিহীন দেদারসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সকলে। আবার এদের মধ্যে যারা মাস্ক পড়ছেন তাদের মধ্যেও কেউ কেউ মুখ ঢাকছেন তো নাক খোলা, আবার অনেকে মাস্ক মুখে না দিয়ে থুতনিতে লাগিয়ে রাখছেন।
হাজীগঞ্জ রুটে যাতায়াতকারী বাসের যাত্রী মোঃ সিরাজ দৈনিক শপথকে বলেন, করোনা যেভাবে আবার দিন দিন বাড়ছে তাতে আমাদের সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যানবাহনে চলাচল করা উচিত। বাসগুলোতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। যাতে আমরা বাসে উঠতে-নামতে জীবাণুমুক্ত হতে পারি।
এদিকে চাঁদপুরের বিভিন্ন বাস থামার স্থানগুলোতে দেখা যায়, হেল্পাররা নিজেরাই মুখে মাস্ক পরিধান না করে যাত্রীদের বাসে উঠতে আহŸান করছে। এছাড়াও সিএনজি স্কুটার কিংবা অটোরিকশাগুলোতে মাস্কের বিষয়ে পুরোপুরি উদাসীন জনসাধারণ।
চাঁদপুর-ঢাকা রুটের পদ্মা এক্সপ্রেস বাসের চালক রিয়াজ উদ্দিন দৈনিক শপথকে বলেন, আমরা ভাইরাসের কারণে সবসময় মাস্ক পরিধান করে থাকি। তবে অনেকক্ষণ পড়ে থাকলে শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, তাই খুলে রাখি। এখন আবার দিন দিন করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। নির্দেশনা পেলে আগের মতো সরকারের নিয়ম মেনেই গাড়ি চালাবো।
চাঁদপুর সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা দৈনিক শপথকে জানান, মহামারি করোনায় আমরা শ্রমিকদের নিয়মিত ব্রিফিং দিয়ে আসছি। তারা যাতে সবসময় মাস্ক পরিধান করে এবং সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাড়ি চালায়। আর যারা সরকারের দেয়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিতে চাঁদপুর জেলায় রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে সংক্রমণের হার কমবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা।
উল্লেখ্য, গত তিন মাসে আগেও করোনার হার ৫ শতাংশের নিচে ছিল। এই সময়ে বেশ কিছুদিন শূণ্যের কোঠায়ও নেমে গিয়েছিল সংক্রমণ। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবত করোনার প্রকোপ বৃদ্ধিতে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।