স্টাফ রিপোর্টার
প্রকৃতিতে চলছে শীতের যৌবন। গত কয়েকদিনে শীতের তীব্রতা তুলনামূলক কম থাকলেও চাঁদপুরের তিন পৌরসভায় এখন উল্টো দৃশ্য। অর্থাৎ গরম। মানে ভোটের গরম। আগামী ৩০জানুয়ারি হাজীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন। ইতোমধ্যে মেয়র পদে দেশের প্রধান দু দল প্রার্থী দিয়েছে। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র আ.স.ম মাহাবুব উল আলম লিপন আর বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক মেয়র আব্দুল মান্নান খান বাচ্চু। সাবেক ও বর্তমান মেয়রের ভোট যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত কে বিজয় পতাকা উড়ায় সেটাই এখন দেখার বিষয়। এ নিয়ে নেতা কর্মীদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনার কমতি নেই। চায়ের আড্ডাও জমে উঠেছে বেশ। চায়ের কাপে ধোঁয়ার মতো মুখে ফুটছে কথার ফুলঝুড়ি। কে কতোটা যোগ্য অথবা অযোগ্য তাই নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। অপরদিকে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন তফসীল ঘোষণা করেছে ফরিদগঞ্জ ও কচুয়া পৌরসভার। ১৪ ফেব্রুয়ারি হবে এ দুই পৌরসভার ভোট গ্রহণ। কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় দলীয় মনোনয়ন পেতে অন্তত দুইডজন সামনের সারির নেতা জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রায় সবাই অবস্থান করছে রাজধানী ঢাকায়। কেউ কেউ ইতোমধ্যে দলীয় ফরমও কিনেছেন। অনেকেই কিনবেন কি কিনবেন না সে নিয়ে আছেন দোদুল্যমান অবস্থায়। অবশ্য দুই পৌরসভাতেই বেশ কজন যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন। তারপরেও দলের সিদ্ধান্তের জন্যে অপেক্ষা করতে হচ্ছে প্রার্থীসহ দলীয় নেতা কর্মী সমর্থকদের। দেখার বিষয় হচ্ছে কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ দুই পৌরসভাতেই গেল নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন দুই তরুণ তুর্কি। এবারও কি তাই? নাকি ভিন্ন কেউ? এমন প্রশ্ন সবার মনে বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে।
কচুয়া পৌসরভায় ইতোমধ্যে চারজন নৌকা প্রতীক পেতে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তবে প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে, বর্তমান মেয়র নাজমুল আলম স্বপন, আক্তার হোসেন সোহেল, মঞ্জুর আহম্মেদ সুজন, আবুল কালাম আজাদ, জামাল হোসেন, সৈয়দ আবদুল জব্বার বাহার, আহসান হাবিব (প্রাঞ্জল)। আর বিএনপিতে সাবেক মেয়র কবির হোসেন প্রধান, বিল্লাল হোসেন মজুমদার, মাহাবুব আলম মৃধা, হাবিব উল্লাহ হাবিব, জাবারুল হাসান শাহীন-এর নাম শোনা যাচ্ছে।
কচুয়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র নাজমুল আলম স্বপন জানালেন তিনি মনোনয়নের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তিনি বলেন, আমি পৌরসভার উন্নয়নে গত পাঁচবছর কাজ করেছি। আমি চেয়ার বা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে এমন কোনো কাজ করিনি। নাগরিক সেবা বৃদ্ধিতে সার্বক্ষণিক কাজ করেছি। মানুষের সমস্যার কথা শুনেছি। দল নিশ্চয় আমাকে বিবেচনা করবে। আমি আবারো সুযোগ পেলে কচুয়া পৌরসভার নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধিতে আপ্রাণ চেষ্টা করবো।
ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে যারা দৌঁড়ঝাঁপ দিচ্ছেন তাদের মধ্যে অন্যতম, বর্তমান পৌর মেয়র মাহফুজুল হক, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাজী কামরুল ইসলাম সাউদ, বর্তমান প্যানেল মেয়র খলিলুর রহমান,উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক আবু সুফিয়ান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন মনির, জেলা পরিষদের সদস্য সাইফুল ইসলাম রিপন,সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মাহবুব মোর্শেদ,উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অহিদুর রহমান রানা,উপজেলা যুবলীগের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক হাজী সফিকুর রহমান, সাহাব উদ্দিন আহমেদ ও বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী শেলী।
অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত সম্ভব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে সাবেক পৌর মেয়র মঞ্জিল হোসেন, বিগত পৌর নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী হারন-অর রশিদ, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খলেক পাটোয়ারী, পৌর বিএনপির সভাপতি আমানত গাজী, সাবেক মেয়র মঞ্জিল হোসেনের ছোট বাই পৌর যুবদলের নেতা ইমাম হোসেন সহ আরও বেশ কয়েকজন। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কেউ কেউ নির্বাচনের পরিকল্পনা করেছেন। এদের অন্যতম সাবেক পৌর প্রশাসক আলহাজ শফিকুল ইসলাম ও পৌরসভার কাউন্সিলর জামাল উদ্দিন।
হাজীগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান মেয়র মাহফুজুল হক জানান, দলের ভেতর ও বাইরে অনেকেই আমার বিরুদ্ধে অপ্রচার চালাচ্ছে। আল্লার রহমতে আমার অবস্থা ভালো। মাঠে যারা নিবেদিত প্রাণ কাজ করছে তাদের অবশ্যই দল বিবেচনা করবে। মনোনয়ন পেলে আমি একটা ফেয়ার নির্বাচন করার চেষ্টা করবো। পৌরবাসীর আমাকে ভোট দিতে উদগ্রীব হয়ে আছে।
চাঁদপুর জেলা নির্বাচন কর্মকতা মোঃ তোফায়েল হোসেন জানান, নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ভালো। আশা করছি নির্বাচনের প্রতিটি ধাপ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে সম্ভব হবো।