মোঃ সবুজ হোসাইন:
হাইমচর উপজেলার ৬নং চরভৈরবী ইউনিয়নের আমতলী বাজার থেকে খালপাড় হয়ে নদীক‚লবর্তী পর্যন্ত ২শত বছরের পুরনো রাস্তাটির বেহাল দশায় পরিণত হয়ে এখন বিলুপ্তির পথে। প্রতিদিন স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ ২ সহস্রাধিক পথচারীর চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় এই রাস্তাটি দিয়ে। বছরের পর বছর প্রস্তাবনা পাঠানো হলেও অদৃশ্য ছায়ায় সংস্কারের আলো দেখে না ঐতিহ্যবাহী এই জনবহুল রাস্তটি। পুরনো এই রাস্তার সংস্কার না করা গেলে চরভৈরবী ইউনিয়ন ভূমি অফিস, কলেজ, ২টি আলিয়া মাদ্রাসা, মাধ্যমিক স্কুল, ২০/২৫ টি প্রাইমারি স্কুল ও ২টি বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ অফিস অকার্যকর হয়ে পড়বে।
জানা যায়, ৬নং চরভৈরবী ইউনিয়নে অন্যন জায়গায় প্রয়োজনের চেয়ে অধিক বরাদ্দে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। যার তুলনায় এ রাস্তাটি সংস্কার হওয়া অধিকতর প্রয়োজন ছিল। কিন্তু নতুন নতুন প্রস্তাবনা অনুমোদন হয়ে কাজ শেষ হয়েছে অনেক প্রজেক্টের। এই রাস্তার প্রজেক্টটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর পরেও অনুমোদন না হয়ে হতাশার বাণী নিয়ে পুনরায় ফিরে আসে।
স্থানীয় ডাকু বেপারী জানান, চরভৈরবী আমতলী থেকে নদীর পাড় পর্যন্ত খাল পাড় সংলগ্ন ২শত বছরের পুরনো এ রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় এখন বিলুপ্তির পথে। যে টুকু রাস্তা আছে তাতে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার পথচারীরা চলাচলে ছোট বড় দূর্ঘটনায় পড়তে হয়। তিনি আরও বলেন, চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড উ-২অ খালের উপর নির্মিত ২ভেল্ট (ভেন্ট সাইজ১.৫০মিঃ ১.৮০ মিঃ) প্রজেক্ট তৈরি করে একাদিক বার প্রস্তাবনা পাঠানো হলেও কোন এক অদৃশ্য কারনে রাস্তাটির অনুমোদন দেয়া হয় না। যার ফলে রাস্তাটি এখন বিলুপ্তির পথে। জনস্বার্থে গুরুত্বপূর্ন এ রাস্তাটির প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা চরভৈরবী বাসীর প্রাণের দাবী।
জেলা মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক দেওয়ান জানান, আমতলী নদীর পাড় হতে আমতলী বাজার হয়ে একটি খাল পূর্বদিকে গেছে। আমতলী বাজারের পূর্বপাশে সুইচগেট দিয়ে পূর্বাঞ্চলের পানি নিয়মিত মেঘনা নদীতে প্রবাহিত হয়। পানির শ্রোতে খালের পাশের রাস্তাটি খালের মধ্যে ধসে পড়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এর প্রজেক্ট তৈরি করে প্রতি বছরই প্রস্তাবনা দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবায়ন হচ্ছে না। যার কুফল এলাকাবাসী সহ স্কুল কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং পথচারীরা ভোগ করছে।
চরভৈরবী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজুল ইসলাম বাবুল জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিগত ১০ বছর ধরে এ রাস্তাটি বেহাল দশায় পরিনত হচ্ছে। চরভৈরবী বাসীর জনদূর্ভোগ লাঘবে গুরুত্বপূর্ন এ সড়কটি মেরামত করা অতি জরুরি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ রাস্তা দিয়ে আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। শিক্ষার্থীরা অনেক সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার শিকার হতে হয়।
৬নং চরভৈরবী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহমদ আলী মাষ্টার জানান- চরভৈরবী আমতলী হতে নদীক‚ল পর্যন্ত ঐতিহ্যবাহী এ জনবহুল রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় সুইসগেটের পানি প্রবাহিত হয়ে মানুষের বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, দোকান ও ভিটেমাটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গত তিন বছর পূর্বে ৩ কোটি ৫০ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্ধ হলেও অদৃশ্য কারনে এই রাস্তা ও খালটির কাজ করা হয় না। জনদুর্ভোগ লাঘবে অতিদ্রæত এ রাস্তার প্রজেক্ট অনুমোদনসহ বাস্তবায়ন করতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
চাঁদপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সাইড ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহিম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থ শাখায় অর্থ ছাড় দিলেই প্রকল্পটির কাজ করা হবে বলে তিনি জানান।