নজরুল ইসলাম আতিক:
চার বছর আগে শখের বসে চাঁদপুর সদর উপজেলার সফরমালি গরুর হাট থেকে ১ বছরের একটি বাছুর কিনেছিলেন। ভালোবেসে নাম রেখেছিলেন খান বাহাদুর। দেখতে দেখতে দীর্ঘ চার বছর তাকে লালন পালন করেন শফিউল্লাহ খান। এবারের কোরবানির জন্য তৈরি করেছেন গরুটিকে। যদিও খামারির দাবি গরুটির বয়স ৫ বছর। এদিকে চাঁদপুরের পাশাপাশি কয়েকটি উপজেলার মধ্যে এই গরুটি সবচেয়ে বড় বলে দাবি অনেকের। যদিও কচুয়ায় দু-একটি গরুর কথা লোকমুখে শুনা গেছে।
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১নং বালিথুবা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড দক্ষিণ রাজাপুর খান বাড়ি আমিনুল হক খানের ছেলে শফিউল্লাহ খান (৪৬)। এ বছর তার যত স্বপ্ন খান বাহাদুর নিয়ে। গরুটি ৩০ মণের অধিক ওজন বলে দাবি করছেন তিনি। দেখতে অনেক বড়সড় হওয়ায় এবং চাঁদপুরে এত বড় সাইজের গরু খুব একটা না দেখায় অনেকেই গরুটি দেখতে বাড়িতে এসে ভিড় জমাচ্ছেন। এতে খামারি শফিউল্লাহ খানের কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হলেও এই বিড়ম্বনাকে আনন্দদায়ক বলে মনে করেন তিনি। ইতিমধ্যে অনেকেই গরুটি ক্রয়ে আগ্রহ প্রকাশ করলেও আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় গরুটি এখনও বিক্রি হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গরুটি উচ্চতায় সাড়ে ৫ ফুট এবং লম্বায় ৭ ফুটের মত। তাছাড়া গরুটি অনেক রাগী হওয়ায় তাকে কন্ট্রোল করতে দুই থেকে তিনজন লোকের প্রয়োজন পরে। আরও দেখা যায় গরুটিকে এক নজর দেখতে আশেপাশের গ্রামের মানুষরা তার বাড়িতে ভিড় করেছেন।
বাতেন গাজী, রুবেল খান, শাকিবসহ বেশ কয়েকজন গরুটি দেখতে এসে বলেন, চাঁদপুরে এত বড় সাইজের গরু আমরা গত ৫/১০ বছরে দেখিনি। অন্যান্য জেলায় এত বড় সাইজের গরুর খবর পাওয়া গেলেও চাঁদপুরে তেমন একটা পাওয়া যায় না। তাই লোকমুখে শুনে ছুটে এসেছি এক নজর দেখতে। তবে লকডাউনে এত বড় গরু কেনার গ্রাহক পেতে কষ্ট হবে খামারির বলে ধারণা তাদের।
শফিউল্লাহ খান বলেন, সখের বসে বাছুর কিনে এনেছিলাম। আমি ও আমার ছেলে ১০ শ্রেণির শিক্ষার্থী রহমাত উল্লাহ খান মিলে চার বছর যাবত সম্পূর্ণ দেশীয় প্রকৃতিতে খাবার দিয়ে লালন পালন করছি। যার মধ্যে ঘাস, ভুসি, খইল, চাউল, ভুট্টা, আম, কাঁঠাল, কলা, তাল কুমড়া ধান, সিদ্ধ করে খাওয়ানো হয় তাকে। কখনো কোন প্রকারের ফিড বা ইঞ্জেকশন জাতীয় কোন কিছুই ব্যবহার করিনি। গরুটি সঠিক পরিচর্যা ও খাবার ঠিক রাখতে গিয়ে নিজের একমাত্র দোকানের অবস্থা করুণ হয়ে গেছে। পুরো দোকানে কোন মালামাল নেই। সব টাকাই আমার এই গরুর পিছনে লেগে গেছে।
তিনি আরো বলেন, আশা করছি এবার কোরবানি ঈদে খান বাহাদুরকে (গরু) বিক্রি করলে ভালো একটি দাম পাবো। গতবছরের কোরবানীর ঈদেও খান বাহাদুরকে হাটে তুলেছিলাম কিন্তু আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় বাড়িতে নিয়ে আসি। তার প্রতি একটা মায়া কাজ করে এখন।
জেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার উদ্দিন জানান, গরুর সাইজের তালিকা আমাদের কাছে নেই। তবে গরুটি যদি হাইব্রিড জাতের হয়ে থাকে তাহলে ৪ বছরে ৩০ মণ বা তার অধিক হওয়া স্বাভাবিক।