সাগর আচার্য্য
চাঁদপুর জেলাধীন ফরিদগঞ্জ উপজেলার কড়ৈতলী গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মনসা বাড়িতে গতকাল মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) অধিবাস পূজার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে ৫ দিনব্যাপী মনসা পূজা। পরম্পরাগত এই মনসা বাড়ির পূজোর বয়স এবার ২৫৪ বছর হতে চললো।
চাঁদপুর জেলায় ৫ দিনব্যাপী মনসা পূজার এমন আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের দেখা শুধুমাত্র কড়ৈতলী মনসা বাড়িতেই মিলে। শুধু তাই নয়, ঐতিহ্যবাহী এই পূজা দেখতে চাঁদপুর জেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ছাড়াও অন্যান্য জেলা থেকে ছুটে আসেন অগনিত ভক্তবৃন্দ।
কড়ৈতলী মনসা বাড়ির মনসা মন্দিরের পরিচালক বাবুল আচার্য্য বলেন, প্রতিবছরের মতো এই বছরেও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে আমাদের বাড়িতে মনসা মায়ের পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সেই আদিলগ্ন থেকে শুরু হওয়া এই মনসা পূজোর জন্য প্রতিবছরেই অপেক্ষা করেন অনেক ভক্তবৃন্দ। মনসা মন্দিরে দেবী মনসার প্রতি হাজারো ভক্তবৃন্দ বিনয়াবনত শ্রদ্ধা, শঙ্খ, উলুধ্বনি, মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে আর ধূপ-ধুনো ও ঢাক, ঢোল, কাসরের মাধ্যমে বাৎসরিক মনসা পূজা অর্চনা করবেন। পূজা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নারী-পুরুষ, সাধু-সন্যাসী ও ভক্তের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে ওঠবে পুরো মনসা মন্দির আঙ্গিনা।
মন্দির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য শ্যামল আচার্য্য বলেন, ২৫৪ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রতি বছরের শ্রাবণ মাসের সংক্রান্তিতে মনসা দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হয় আমাদের বাড়িতে এবং আমাদের বাড়ির এই মনসা পূজার পরিচিতি পুরো জেলাজুড়ে রয়েছে। প্রতি বছরের মতো ৫দিন ব্যাপী এই পূজানুষ্ঠানের মূল পর্ব সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী পূজা ঘিরে রয়েছে ব্যাপক আয়োজন। বিশেষ এই ৩ দিনের প্রতিদিন সকালে পুষ্পাঞ্জলি, দুপুরে ভোগারতি শেষে ভক্তদের মধ্যে মহাপ্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যায় মঙ্গলারতি ও রাতে মনসা দেবীর পুঁথি পাঠ শেষে থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
দেবী করুণায় সকল অমঙ্গল নাশে ও সুখ সমৃদ্ধি কামনায় এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার অধিবাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা দিয়ে শুরু হওয়া মনসা পূজা আজ বুধবার (১৭ আগস্ট) মহাসপ্তমী, বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) মহাষ্টমী, শুক্রবার (১৯ আগস্ট) মহানবমী এবং শনিবার (২০ আগস্ট) দশমী পূজার মধ্যে দিয়ে সমাপ্ত হবে।