আবু ইউসুফ
আজ আর শরীরের জোর নাই, তাই ছেলেরাও দেখে না। অথচ এই দেহ খাটিয়ে ৮ জন ছেলে মেয়ে হাইল্লা লাইল্লা বড় করেছি। এখন বড় মেয়ের শ্রমেই জীবন চলে। আফসোসের স্বরে কথাগুলো বলছিলেন জুগেশ সরকার। তিনি এখন ৮০ বছরের কুঁজো বুড়ো। স্ত্রী রসনা রানী সরকারকে নিয়ে চলছে টানা পোড়নের সংসার। কচুয়া উপজেলার বাসাবাড়িয়া গ্রামে জন্ম নেয়া এই বুড়ো লোকটির নিজের জীবনের প্রতি অনেক ক্ষোভ।
চার ছেলে যার যার মতো জীবনযাপন করে। আর মেয়েদের বিয়ে দিতে গিয়ে জমিজমা বিক্রি করে এখন তিনি নি:স্ব। আর এ নিয়ে ছেলেরা প্রায়ই অনেক কথা বলে। তাই অতিষ্ঠ হয়ে সন্তানদের বিরুদ্ধে বলছি এদের লালন পালন করে ভুল করেছি। এরপরও বলে থাক ওরা ভালো থাক।
সালিশ ডাকেন না? এমন প্রশ্নে ক্ষোভের স্বরেই বললেন, মাঝে মাঝে গ্রাম্য সালিশ বসাই সমাধান দেওয়ার জন্য কিন্তু বিচার পাইনা। আমার প্রতি অবিচার করা হয়। আমাদের হিন্দুরা খুব খারাপ। তবে মুসলমানদের প্রতি তার কোন ক্ষোভ নেই বলে জানান।
বিচার কারা করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিচার করে এলাকার লোকেরাই। তারা আওয়ামী লীগ করে ঠিকই, আমিও নৌকায় ভোট দিছি, শেখ মুজিবকেও দিয়েছি। এমনকি এখনো নৌকায় দেই। তয় এখনতো নৌকা হাসিনার। তবে চেয়ারম্যানের নাম জানি না। না জানলে কি হবে মার্কাটা নৌকা তাই ভোট দিছি। ভোট দিতে গিয়া শুধু নৌকা র্মাকা খুঁজি। কে প্রার্থী হেডা দেহি না। আগে সরকারের কিছুই না পাইলেও এখন ভাতা পাই। মাঝে মাঝে চালও পাই।
দেশের উন্নয়ন কথা বলতেই জুগেশ বলেন, অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু আমার বাড়ির সাথের রাস্তার কাজ আজো হইলো না। উন্নতি হইলে কি হইবো। অমানুষগুলোরতো কিছু হইলো না। ঘুরেই আপন ছেলেদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, জানেন মিয়া আমার আর স্ত্রীর প্রতি মাসে চার হাজার টাকার ঔষধ লাগে। বড় মেয়েটি দেখভালে না কুলোলে জমি বিক্রি কওে দেনাপানা শোধ করতে হয়। এমন কেউ আছে যে আমার ছেলেদের বুঝাতে পারে। তারা যেন আমার দিকে নজর দেয়। আসলে এদের বিচার করার কেউ নেই…
আজ,
রবিবার , ৪ জুন, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ , ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।