সম্পাদকীয়
যুবসমাজের আগাম লেভেল কিশোর শ্রেণি। একই শ্রেণিতে কিভাবে কোথায় চলাফেরা করতে হবে জীবনযাত্রা পরিচালনা কিভাবে করতে হবে এটা বিশেষ করে পরিবার পরিজন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে। শিক্ষা নিয়েই তাদের জীবন তারা পরিচালনা করবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কিশোরদের অসদাচরণ সীমা অতিক্রম করে চলছে। সমগ্র দেশব্যাপী কিশোরদের অনৈতিক কর্মকান্ডে প্রভাবে বিভিন্ন রকমের অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত হচ্ছে। তাদের অপরাধমূলক আচার আচরণের কারনেই পরিবার থেকে শুরু করে দেশের সমাজব্যবস্থা প্রতিনিয়ত কুলুষিত হচ্ছে। বর্তমানে কিশোরদের অপরাধমূলক কর্মকাÐ প্রকাশ করা হয় পত্রপত্রিকা থেকে শুরু করে গণমাধ্যম এর প্রতিটি স্তরে। প্রতিদিন কিছু না কিছু কিশোরদের দ্বারা সৃষ্ট অনৈতিক কর্মকাÐের খবর প্রকাশ হচ্ছে। দৈনিক শপথ পত্রিকা ১৭ ফেব্রæয়ারি এমন খবর প্রকাশ করেছে যে ‘কচুয়ায় বেড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত প্রকাশ্যে দিবালোকে ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত আরেক কিশোর’ এই যখন অবস্থা তখন এমন বিষয়ের দিকে সরকারের হারহামেশা অভিযান চলে আসছে। হলে হবে কি সরকারের প্রশাসন আইন প্রশাসন উপজেলা প্রশাসন যারপরনাই কিশোরদের উৎপাত কমানোর জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেন আমরা উৎপাত থেকে সমাজকে রক্ষা করতে পারছি না। এই কেন-এর উত্তর খুঁজতে গেলে দেখা যাবে সঠিক জীবনযাত্রা এবং সঠিক শিক্ষার থেকে দূরে সরে গেছে বর্তমান সমাজ। প্রতিনিয়ত দেশের মধ্যে দেদারছে সরকারের প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদকতার ছড়াছড়ির কারণে মনস্তাত্তি¡ক পরিস্থিতির অবনতির হচ্ছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে প্রতিটি উপজেলায় উৎপত্তি হচ্ছে কিশোর গ্যাংয়ের দল। এদের ব্যবহার করে সামাজিক কিছু ভুল চিন্তাধারার লোক বিভিন্ন অনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য নিজের অপরাধকে ঢাকার জন্য তাদের ব্যবহার করে থাকে। এমনও দেখা যায় ব্যক্তিগত নৈতিকতা ঢাকা দেওয়ার জন্য অনেক সময় এই অবুঝ কিশোরদের ব্যবহার করে স্বার্থ হাসিল করা হয়। আর এ কাজ করতে গিয়ে তারা লাভবান হচ্ছে। ফলে কিশোর গ্যাংয়ের এই অপরাধমূলক কাজ চালাতে সমস্যা হয় না। আর মাঝে মাঝে বিশেষ করে সাধারণ খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে তারা মনস্তাত্তি¡ক পরিস্থিতি সামাল না দিতে পেরে অহেতুক ঘটনার জন্ম দেয়। বিশেষত দেখা যায় সমাজের বিভিন্ন অঞ্চলে এই কিশোররা নারীদের উৎপাত করে থাকে। স্কুল কলেজে পড়ুয়া ছাত্রীদের উপর বিভিন্ন রকম ইভটিজিং এর আলামত তৈরি করা এমনকি আঞ্চলিক সড়কের আনাচে-কানাচে বিভিন্ন রকমের অপরাধ সৃষ্টি করা এদের জন্য নিত্যনৈমত্তিক অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা শিক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। অথচ স্বার্থন্বেষী মহল নিজেদের দলভারী করতে এদেরকে সংগঠিত করে থাকে। এমন ভুতুড়ে প্রভাব এর ফলে কিশোর গ্যাংয়ের নানামুখী অপরাধের বিস্তার ঘটে চলছে। শুধু কচুয়ায় নয়, সমগ্র বাংলাদেশে কিশোর গ্যাংয়ের বহুমুখী অপরাধের অবতারণা হচ্ছে। তবে প্রশাসন এর পিছনে সময় ব্যয় করছে এবং এদের উৎপাত থামানোর জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন দেশের বিভিন্ন ঘটনাকে সামাল দিতে হয় বিভিন্ন সমস্যাকে ইমপ্রেস করতে হয়। একটা বিষয় নিয়ে তারা সারাক্ষণ থাকে না। তাই পরিবার-পরিজন থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সমাজের সচেতন ব্যক্তিদের এই বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। আরে বিশেষ গুরুত্ব কে প্রতিষ্ঠা করতে হলে প্রয়োজন সুশিক্ষার নৈতিক শিক্ষার। নৈতিক শিক্ষা শিক্ষার পদ্ধতি থেকে সরে গেলে যা হবার তা তো হচ্ছে। বিশেষ করে শিক্ষা পদ্ধতির পদ্ধতির উপরে জোর না দিলে এবং শিক্ষা কারিকুলামে নৈতিকতা সম্পৃক্ত পাঠের প্রসার না ঘাটালে অপরাধমূলক কাজের উৎপত্তি হতেই থাকবে। পৃথিবীর সৃষ্টি লগ্ন থেকে ঐশ্বরিক ভাবনা থেকে পৃথিবী এই পর্যন্ত এগিয়ে আসছে। যদিও মানুষ তাদের মনস্তাত্তি¡ক পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পৃথিবী কে এগিয়ে নিয়েছে সাজসজ্জা দিয়েছে এর পিছনে রয়েছে একটি বিশেষ শক্তি। সেই বিশেষ শক্তিকে কেউ বিশ্বাস না করলেও শক্তির প্রভাবে পৃথিবী চলছে। অবশ্যই নৈতিক শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। নৈতিক আচার আচরণের দিকে জোর দিতে হবে। পরিবার-পরিজন থেকে পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজন সকলের এই বিষয়ের উপরে জোরালো পদক্ষেপ রাখতে হবে। নিজস্ব সন্তান কোথায় যাচ্ছে কার সাথে মিশছে কিভাবে তার সময় ব্যয় করছে এই সমস্ত বিষয় বিশেষ করে পরিবার-পরিজনদের পরিবার-পরিজনদের সন্তানদের প্রতি অবহেলা এবং তাদের বিষয়টা খোঁজ না নেওয়ার কারণে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত যুবসমাজের পূর্বেকার বয়সের কিশোরদের মানসিকতার অবনতি হচ্ছে। কিশোরদের অবস্থান তো এক জায়গায় স্থির নয় প্রতিটি গ্রামের পরোতে পরোতে কিশোরদের বাসস্থান অবস্থান। ফলে কোথায় কখন কিভাবে কিশোর গ্যাংয়ের পরিস্থিতি তৈরি করছে এবং অনৈতিক কর্মকান্ড করছে এসব একনাগাড়ে সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে খবর রাখা প্রশাসনের সম্ভব নয়। কিশোর গ্যাং কৃত যে সমস্ত অপরাধ হয় এ সমস্ত অপরাধ তারা নিজেরা নিজেরাই করে না কিছু কিছু যদিও নিজে নিজে করে থাকে কিন্তু কিছু কিছু কাজের পিছনে অশুভ লোকের হাত রয়েছে। বিশেষ করে বিশেষ বিশেষ মহলের হাত থেকে থাকতে পারে। কিশোরদের যুক্ত করে তাদের মনের গতিকে সাপোর্ট দিয়ে নিজস্ব মত কে প্রতিষ্ঠা করার জন্য অনেক সময় কিশোরদের উৎসাহ দেয়া হয়। যা প্রশাসনের নজরের বাইরে থেকে যায়। যারা কিশোরদের বিভিন্ন অপরাধে সমীহ করে যায় এরা আবার রয়ে যায় বিভিন্ন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায়। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে এদেরকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিলেও ঊর্ধ্বতন রাজনীতিবিদগণ অবহিত নাও থাকতে পারেন যেহেতু রাজনীতির শিকড় গ্রামপর্যায়ে প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যমান, ক্রিয়া-কলাপ মনিটরিং করা সম্ভব হয় না। কারণ মাঝখানের শ্রেণীর রাজনীতিবিদদের চাপিয়ে যাওয়ার ফলে। তাই কিশোর গ্যাং থামাতে হলে তৃণমূলে নজর দিতে হবে।