মো. মজিবুর রহমান রনি:
ফেরি করে মাছ বিক্রি করে চলছে লেখাপড়া। ঘরে অসুস্থ বাবা। তার খরচও জোগাড় করতে হচ্ছে তার। ছোট বেলাই হারিয়েছে মা তুলশী রানীকে। জীবন যুদ্ধে এমন কঠিন সময় পার করার মধ্য দিয়ে ইতিমধ্যে পার করেছে এইচএসসির গন্ডি। ২০১৮ সালে এসএসসি ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করে। এখন মেহের ডিগ্রি কলেজে বিবিএসএসের ছাত্র সে। সকাল বেলা আড়ৎ থেকে মাছ কিনে আবার বাড়ি বাড়ি ফেরি করে ওই মাছ বিক্রি করা এই ছেলেটি হলো সজিব চন্দ্র দাস। সে হাজীগঞ্জ উপজেলার ৯নং গন্ধ্যর্বপুর (উঃ) ইউনিয়নের গন্ধ্যর্বপুর গ্রামের রাধেরশাম চন্দ্র দাসের ছেলে। ২ ভাই ২ বোনের মধ্যে সে সবার ছোট।
গ্রামে মাছ বিক্রি করে বাড়ি ফিরতেই কথা হয় তার সাথে। মাছ বিক্রি করেই লেখাপড়া করে হতে চায় বড় অফিসার। বৃহস্পতিবার স্বপ্নের কথাগুলো বলতে গিয়ে বলেন, আমার ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন বড় অফিসার হওয়ার। তাই সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে অসুস্থ বাবাকে সাথে নিয়ে মাছ ফেরি করে সংসার চালাচ্ছি আর সাথে পড়ালেখাটা চালিয়ে যাচ্ছি। সজিব জানায়, সকালে আড়ৎ থেকে মাছ বিক্রি করে বাড়ি বাড়ি ফেরি করে বিক্রি করে দৈনিক ৩০০ টাকা আয় হয়। এতে বাবাকে নিয়ে চলে সংসার আর আমার লেখাপড়া। তবে এ পর্যন্ত সরকারি কোন সহায়তা আমি পাইনি। আমি যদি একটু সহযোগীতা পাই তাহলে আমার লক্ষ্যে পৌছতে পারবো।
বাবা রাধেরশাম চন্দ্র দাস বলেন, ছোট বেলা থেকে তার ইচ্ছা বড় অফিসার হবে। কিন্তু সামর্থ্য না থাকায় ভালো করে পড়াতে পারছি না। সে নিজের চেষ্টায় ডিগ্রী পর্যন্ত গিয়েছে। সরকারের সহায়তা পেলে হয়ত লেখাপড়াটা ভালোভাবে শেষ করতে পারবে।
কাঁকৈরতলা জনতা কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুল হক পাটোয়ারী বলেন, সজিব আমাদের ছাত্র ছিল। সে খুবই অসহায় এবং মেধাবী। আর্থিক অনটনের কারণে বেশিদুর এগুতে পারছে না। আমাদের কলেজে থাকতে যতটুকু সম্ভব সহায়তা করেছি। এখন সরকার এগিয়ে আসলে হয়তো তার স্বপ্নপূরণ হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ হিরা বলেন, আমি জানি সে কষ্ট করে লেখাপড়া করে। তাই তাকে যতদুর সম্ভব সহায়তা করব।