মেহেদী হাসান দিপু, ঢাকাঃ
যতদিন যাচ্ছে সাথে সাথেই বেড়ে চলছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। কোনকিছু দিয়েই যেন আটকানো সম্ভব হচ্ছে না ভয়াল মহামারী করোনাভাইরাস (COVID-19)। ফলাফল স্বরুপ দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর তালিকা এবং দিন দিন প্রকোপ আকার ধারণ করছে করোনাভাইরাস (COVID-19)।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনের তথ্য মতে ৬৮টি পরীক্ষাগারের মধ্যে ৬৫টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৭ হাজার ৩৪ টি এবং পূর্বের কিছু নমুনাসহ ৬০টি পরীক্ষাগারে মোট পরীক্ষা করা হয়েছে ১৮ হাজার ৯৯ টি। বর্তমান করোনা পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে জানা যায় গত ২৪ ঘন্টায় সারাদেশে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৮০৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় মোট ৬৫ টি পরীক্ষাগার হতে আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করা হয়। এই পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪০৯ জন এবং সর্বমোট সুস্থ হয়েছেন ৫৫ হাজার ৭২৭জন। এ পর্যন্ত সুস্থতার হার ৪০.৪৪%।
অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরন করেছেন ৪৩ জন এবং সর্বমোট মৃতের সংখ্যা দাড়ালো ১ হাজার ৭৩৮ জন। সনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১.২৬%।
সারাদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাড়ালো ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৭৮৭ জনে। তথ্যগুলো ২৮শে জুন (রবিবার) দুপুর আড়াইটার অনলাইন বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা নিশ্চিত করেন ।
বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী মৃত্যু বিশ্লেষণে অধ্যাপক ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, মৃত ব্যাক্তিদের মধ্যে পুরুষ ৩১ জন এবং নারী ১৪ জন। বয়স বিশ্লেষণে থেকে জানা যায় ০ থেকে ১০ বছর বয়সের ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সের ২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সের ৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সের ১৩ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সের ১২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছর বয়সের ৭ জন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছর বয়সের ১ জন। যায় তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ২১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১০ জন, রাজশাহী বিভাগের ২ জন,খুলনার ৩ জন, বরিশালে ২ জন, সিলেট বিভাগের ৩ জন, রংপুর বিভাগের ১ জন ময়মনসিংহের ১ জন।
গত ২৪ ঘন্টার তথ্য অনুযায়ী আইসোলেশনে আনা হয়েছে ৭১৭ জন এবং গত ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত সর্বমোট আইসোলেশনে আছেন ১৪ হাজার ৫২৩ জন। এর মধ্যে নতুন করে ছাড় পেয়েছেন ৪৬১ জন এবং সর্বমোট আইসোলেশনে থেকে ছাড় পেয়েছেন ১০ হাজার ২২৭ জন।
অনলাইন বুলেটিনের এক পর্যায়ে ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে কোয়ারেন্টাইনে এসেছেন ৩ হাজার ৯০ জন এবং কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৪০৫ জন। সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী সর্বমোট কোয়ারেন্টাইনে এসেছেন ৩ লক্ষ ৫৮ হাজার ২ শত ৭১ জন এবং সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী সর্বমোট কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ লক্ষ ৯৩ হাজার ৬৭৩ জন।বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৬৪ হাজার ৫৯৮ জন।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় অনলাইন মুক্তপাটে হট লাইন সেবায় নিয়োজিত আছেন ১৬ হাজার ৪০৪ জন চিকিৎসক এবং সেচ্ছাভিত্তিতে সেবা দিচ্ছেন ৪ হাজার ২১৭ জন চিকিৎসক। তাছাড়াও স্ক্রিনিং কার্যক্রম বিমানবন্দর, স্থলবন্দর এবং সমুদ্রবন্দরে অব্যাহত আছে। ৩ বন্দরে গত ২৪ ঘন্টায় স্ক্রিনিং করা হয়েছে ১৩০৮ জনকে। এর মধ্যে বিমানবন্দরে ৭৩১ জন, স্থলবন্দরে ৩৮৬ জন এবং সমুদ্রবন্দরে ১৯১ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জনসাধারণকে ওয়েবসাইটে দেয়া সকল স্বাস্থ্যবিধি এবং দৈনন্দিন কাজের জন্য সকল নিয়ম সমূহ মেনে চলার জন্য এবং সকল স্থানে পর্যাপ্ত সামাজিক দূরত্ব বজায়ে রাখার ব্যাপারে কঠোর ভাবে বলা হয়।লকডাউনের রেড জোন এলাকা বিভক্ত করা হলেও বিভিন্ন স্থানে জনসমাগম এড়িয়ে চলার জন্য নির্দেশ দেয়া হয় এবং করোনা পরিস্থিতিতে একে অপরকে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য উদ্ভুদ্ধ করার জন্যও বলা হয়।