নজরুল ইসলাম আতিক:
চাঁদপুর শহরের মিশন রোডের খান বাড়ির পাশে দর্জি বাড়িতে ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজার মোঃ আব্দুর রব খানের বাসায় দ্বিতীয় তলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করেন শাহানারা শাহআলম দম্পতি। তাদের দুই ছেলে রানা ও রকি দুবাই প্রবাসী। একমাত্র মেয়ে তানিয়া ইউরোপে স্বামীকে নিয়ে থাকেন। বাসায় শুধুমাত্র স্বামী-স্ত্রী তারা দুইজন থাকেন। গত দুই দিন আগে স্বামী-স্ত্রী দুইজনই করোনা পরিক্ষার জন্যে সেম্পল দিয়ে আসেন। গতকাল তাদের দুইজনেরই করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে। সকালে শাহানারা বেগম মারা যান। এরপর এক অসস্থ অবস্থায় বাসায় ছটপট করতে থাকেন স্বামী শাহ আলম। খবর পেয়ে করোনায় আক্রান্ত মৃত স্ত্রীর দাফন ও মুমূর্ষ অবস্থায় তার স্বামীকে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণের ব্যবস্থা করলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ। গতকাল সোমবার সকালে পরিবারটির একাকিত্বের খবর পেয়ে সেখানে দ্রুত ছুটে যান তিনি। পরে করোনায় মৃত স্ত্রী শাহানারা বেগম ও তার স্বামী শাহ আলম ভূইয়াকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
স্থানীয়রা জানায়, গত দুইদিন আগে তারা করোনার পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়ে আসেন। তাদের রেজাল্টও পজেটিভ আসে। সকালে শাহানারা বেগম মৃত্যুবরণ করেন এবং তার স্বামী মুমূর্ষ অবস্থায় বাসায় পড়েছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন সদর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ। বিষয়টি সাথে সাথেই জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশকে তিনি অবহিত করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিষয়টি জানতে পারেন জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযুদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ‘আঞ্জুমানে খাদেমুল ইনসান’ এর এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেন। পরে এম্বুল্যান্সের মাধ্যমে স্বামী শাহ আলমকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন ইউএনও। পরে স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে মৃত শাহানারা বেগমের দাফনের ব্যবস্থাও করেন তিনি।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ জানান, আমরা কখনোই চাই না এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটুক। আর এই ধরনের ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে হলে আরও সচেতন হতে হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি মানুষকে সচেতন করতে। কিন্তু সাধারণ মানুষের ভেতর এখনো অনেক অসচেতনতা বিরাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেখলে অনেকে তাদের মাক্স সঠিকভাবে পরিধান করে কিন্তু বাকি সময় মাক্স ছাড়াই রাস্তাঘাটে চলাচল করছে। যা করোনা পরিস্থিতির জন্য বিপদজনক। ভ্রাম্যমান আদালতের ভয়ে নয়, নিজেদের শারীরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই সকলকে আরো সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।