বিল্লাল ঢালী:
৯ মার্চ চাঁদপুরে প্রথম করণা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর থেকে দিন দিন জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। জেলার মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলা কারণা আক্রান্তের বড় জোন। শুধু সদর উপজেলা তেই এপর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ জন। যেখানে চাঁদপুর জেলা আক্রান্তের সংখ্যা মোট ১৪৮ জন।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, মোট করোণা আক্রান্ত রোগী ১৪৮ জন। চাঁদপুর সদর উপজেলায় ৮১ জন, মতলব উত্তরে সাতজন, মতলব দক্ষিণে ছয়জন, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ২৭ জন, হাইমচরের চারজন, হাজীগঞ্জ উপজেলায় সাত জন, শাহরাস্তি উপজেলায় আটজন এবং কচুয়া উপজেলায় আটজন।
চাঁদপুর জেলায় করণ আক্রান্ত ১৪৮ জনের মধ্যে ১৪৫ জন রোগী চাঁদপুরে সনাক্ত হয়েছে। বাকি তিনজনের মধ্যে দুইজন ঢাকা এবং একজন লক্ষ্মীপুরে আক্রান্ত হয়ে চাঁদপুরে এসেছে।
চাঁদপুর জেলায় ২৭ মে পর্যন্ত বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন ছিল তিন হাজার ৬৬৩ জন। তারা সকলেই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে। বর্তমানে ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন জেলা থেকে চাঁদপুরে আগত ১৯ জন হোম কোয়ারান্টিনে আছেন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টিনে ছিল চারজন। চারজনই সুস্থ হওয়ায় হাসপাতাল থেকে তাদেরকে রিলিজ দেওয়া হয়।
জেলায় ২৭ মে আইসোলেশন এ রোগী ছিল ৬৮ জন এর মধ্য থেকে ৬০ জনকে সুস্থ হওয়ায় রিলিজ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে আইসোলেশন এ রোগীর সংখ্যা ৮ জন। জেলায় এপর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন মোট তিন হাজার ৬২৪ জন। চাঁদপুর জেলায় এ পর্য ন্ত ৩৪ জন কারনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।
এরমধ্যে সদর উপজেলায় ১৯ জন, মতলব উত্তর উপজেলায় চারজন, শাহরাস্তি উপজেলায় একজন, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় পাঁচজন, হাজীগঞ্জ উপজেলায় ৩ জন, এবং হাইমচর উপজেলা দুইজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।
চাঁদপুর জেলায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৩ জন রোগী মৃত্যুবরণ করেছে। চাঁদপুর সদর উপজেলায় পাঁচজন, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় তিনজন, কচুয়া উপজেলায় দুইজন, মতলব উত্তর উপজেলায় একজন ,শাহরাস্তি উপজেলায় একজন এবং হাজীগঞ্জ উপজেলায় একজন।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় চাঁদপুর জেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছিল। জেলায় সরকারি ভাবে আটটি এবং বেসরকারিভাবে ২০ টি চিকিৎসাকেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। জেলায় মোট ৭৭৩টি বেড প্রস্তুত আছে রোগীদের জন্য। এরমধ্যে সরকারিভাবে ২৪৩ টি এবং ২৩০ টি বেড প্রস্তুত আছে বেসরকারীভাবে।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় প্রস্তুত আছে সরকারিভাবে ৭৫ এবং বেসরকারিভাবে ২৩ টি বেড। ভাইরাস মোকাবেলায় জেলায় এ পর্যন্ত প্রস্তুত রাখা হয়েছে সরকারিভাবে ২০৪ জন ডাক্তার এবং বেসরকারী ভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৪৩ জন ডাক্তার।
জেলায় করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ব্যক্তিগত শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে ১০ হাজার ৫৪ টি সরকারি ভাবে এবং বেসরকারিভাবে বিতরণ করা হয়েছে ১০০ টি। বর্তমানে জেলায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী সরকারিভাবে মজুদ আছে ৪১৪৬। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জরুরী চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জেলায় আটটি এম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে চিকিৎসাকেন্দ্রে জরুরি বিভাগে জেলায় কোন আইসোলেশন ব্যবস্থা নেই।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় চাঁদপুর জেলায় এ পর্যন্ত ৬৮হাজার ৫৭৮ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে ২৭৪৩ দশমিক ১৩০ মেট্রিক টন ত্রাণ। আর ২৫ হাজার চারশ একটি পরিবারকে নগদ অর্থ ১ কোটি ২৭ লাখ ৫৮৭ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় জেলায় এখন পর্যন্ত মজুদ আছে ২০৫ দশমিক ৪৭ মেট্রিক টন খাদ্য ৩০১বান্ডেল ঢেউটিন, তিন লক্ষ টাকার শিশুখাদ্য এবং নগদ অর্থ জমা আছে ১১ লক্ষ দশ হাজার ৪১৩ টাকা।