স্টাফ রিপোর্টার:
কোভিড-১৯ হেল্প লাইন ইউএইচপিপিও চাঁদপুর সদর একটি ফেসবুক ফেইজ। চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডাঃ সাজেদা বেগম পলিন এর উদ্ভাবনী পরিকল্পনা এ পেইজটি। সারাদেশে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে যখন স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছিলো ঠিক তখনি ডাঃ সাজেদা এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এর মাধ্যমে চিকিৎসাবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছেন। গত ৪ এপ্রিল থেকে এ পেইজের যাত্রা শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ। আর ডিজিটাল বাংলাদেশের এক প্রতিচ্ছবি যেন এ পেজটি। তথ্য প্রযুক্তির যথাযত ব্যবহারের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন ডাঃ সাজেদা বেগম। মহামারির এ সময়ে যেন ঘরে বসে মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে পারেন তাই নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন ডাঃ সাজেদা ও তার সহকর্মীরা। এ পেজের অন্যতম কার্যক্রম হলো জনসচেতনা সৃষ্টি ও চিকিৎসা সেবা। সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পেজে একাধিক চিকিৎসকের মোবাইল নম্বর দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ইনবক্সে প্রচুর মানুষ ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে সর্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য গ্রহণ করছেন। এখানে নিয়মিত চাঁদপুর জেলার সার্বিক করোনা চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি চাঁদপুরবাসীকে সচেতন করা হচ্ছে। নানা সময়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ যেমন, চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন, চাঁদপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও কানিজ ফাতেমা, আড়াইশ ষয্য বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ মাহাবুবুর রহমান, করোনা বিষয়ক ফোকাল পার্সন ডাঃ সুজাদ্দৌলা রুবেল, চাঁদপুর বিএমএর সেক্রেটারি ডাঃ মাহমুদুন্নবী মাসুমসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা লাইভে এসে জনসচেতনতা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রদান করছেন। এছাড়াও জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের জাতীয় পুষ্টি সেবার ডিপিএম ডাঃ নন্দলাল সূত্রধরসহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শেখ রাসেল গ্যাস্টলিভার ইনিষ্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনিস্টিটিউট হাসপাতাল এবং দেশে বিদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ লাইভে এসে চিকিৎসা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেছেন। যার মাধ্যমে সমগ্র চাঁদপুরবাসী উপকৃত হচ্ছেন। এতে যে শুধু চাঁদপুর জেলাবাসী উপকৃত হচ্ছেন তা নয় বরং দেশের অন্যান জেলার এমনকি প্রবাসী বাঙালীরাও সেবা গ্রহণ করছেন। সেবা গ্রহণকারী অনেকেই ধন্যবাদ জানান যা ডাঃ সাজেদ ও তার সহকর্মী চিকিৎসা কাজের স্পৃহা অনেক বাড়িয়ে দিচ্ছে। এছাড়াও করোনা জয়ী অনেক রোগী ভিডিও বার্তার মাধ্যমে করোনা জয় সর্ম্পকে নিজেদের বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। ফলে চাঁদপুরবাসী কোভিড-১৯ সম্পর্কে সম্মুখ ধারণা পাচ্ছেন। এ পেইজ নিয়ে অনেকগুলো স্থানীয় এবং জাতীয় গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যার ফলে সারা দেশে ডাঃ সাজেদা এবং তার এ পেজটি ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন সময়ে ডাঃ সাজেদার এ অনবদ্ধ ভূমিকার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক স্বাস্থ্য ডাঃ হাসান শাহরিয়ার কবির ৬মে তাকে করোনা জেনারেল হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন। শুধুমাত্র ফেসবুক পেজেই নয় সর্বদা যোগাযোগ রাখছেন চাঁদপুর সদরের করোনা আক্রান্ত রোগীদের সাথে। চিকিৎসা সেবা দেয়ার পাশাপাশি তাদের যে কোনো প্রয়োজন মেটাতে প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধির সহায়তায় কার্যকর ভূমিকা রাখছেন। ডাঃ সাজেদা করোনা আক্রান্ত রোগীদের পরিবারের নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। বাড়িতে গিয়ে মানসিক শান্ত¦না দেয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার পরমর্শ দিচ্ছেন। ডাঃ সাজেদা বেগম পলিন তার পেজের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে চাঁদপুরবাসীর জন্যে কাজ করে যাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডাঃ সাজেদা বেগম পলিন বলেন, মূলত আমার চেষ্টা মানুষ যেন ঘরে থেকে চিকিৎসা সেবা ও বিভিন্ন পরামর্শ পেতে পারে। এছাড়া কোন কোন এলাকায় করোনার প্রার্দুভাব বেশি সে বিষয়গুলোও জানানো হয় পেইজে।
চাঁদপুর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ শাখাওয়াত উল্লাহ এ পেইজ সম্পর্কে বলেন, নিশ্চয় এটি ভালো উদ্যোগ। কারণ এ সময়ে জনসচেতনা খুবই প্রয়োজন।