মোঃ রাছেল:
কচুয়া উপজেলার আলিয়ারা-কাঠালিয়া বিলে আগাম বৃষ্টি, বোয়ালজুড়ি ও জোরাখালের জোয়ারের পানি ধানের মাঠে ঢুকে পড়ায় পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে প্রায় ৩শ একর জমির ধান। নিচু এলাকা ও নদীর জোয়ার হওয়ায় পানি বন্দি হয়ে পড়েছে এই মাঠ। ফলে সোনার ফসল চোখের সামনে পানিতে তলিয়ে যেতে দেখে পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছে মাঠের প্রায় ৪ হাজার কৃষক। নিচু এলাকা হওয়ায় ওই মাঠে বছরে একটি মাত্র ফসল ইরি ধানের ফলন হয়। যা দিয়ে ওই এলাকার মানুষের সারা বছর চাহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট ধান বাজারে বিক্রি করে কৃষকরা।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, মাঠের পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণে রয়েছে প্রবাহমান বোয়ালজুড়ি খাল। যে খাল সরাসরি এসে পড়েছে মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীতে। প্রতি বছর ওই খালের পানি দিয়ে বিএডিসি সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে চাষাবাদ কাজ হয়ে থাকে। মাঠ থেকে ধান সংগ্রহ করে নিয়ে আসার জন্য খালের উপর কোন ব্রীজ না থাকায় চলাচলের জন্য বাঁশের নির্মিত অস্থায়ী সেতু দিয়ে ধান নিয়ে খাল পারাপার হতো কৃষকরা। হঠাৎ নদীর জোয়ার আসায় ওই সেতু পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া বিলের মাঝ খান দিয়ে মাঠ থেকে ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাবার নেই কোন রাস্তা।
ওই মাঠের কৃষক ও সেচ প্রকল্পের ম্যানেজার জসিম উদ্দিন জানান, আলিয়ারা-কাঠালিয়ার বিলের চারপাশের দশ গ্রামের প্রায় ৪ হাজার কৃষক বিএডিসি সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে ওই মাঠে ধান চাষ করে আসছে। আগাম বৃষ্টি, বোয়ালজুড়ি ও জোরাখালের জোয়ারের পানি মাঠে ঢুকে পড়ায় পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে এই মাঠের ফসল। এছাড়া পানি নিস্কাশনের নেই কোন ব্যবস্থা।
ওই মাঠের কৃষক বিমল, আবদুর রহিম মোল্লা, আতাউল করিম ও আনোয়ার হোসেন জানান, মাঠের মধ্যখানে কাঠালিয়া থেকে আলিয়ারা পর্যন্ত মাঝ বরাবর একটি রাস্তা নির্মাণ, খালের পারে বাধ ও বোয়ালজুড়ি খালের উপর পাকা ব্রীজ নির্মাণ করলে ধান সংগ্রহ করা সম্ভব। তাছাড়া মাঠের ভিতর পানি প্রবেশে বন্ধ করতে পারলে বা পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা থাকলে এ সমস্যা হতো না। এ পর্যন্ত ওই বিলের প্রায় ২০/২৫ একর জমির ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। বাকী জমির ফসলী ধান নিয়ে বিপাকে ওই এলাকার কৃষকরা। তাই কৃষকদের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা করে ধান চাষাবাদ ও ফসলী জমির ধান সংগ্রহ করতে রাস্তা ও ব্রীজ নির্মাণের দাবী জানান তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ সোফায়েল হোসেন বলেন, আমি ওই মাঠ পরিদর্শন করেছি। ধানের অধিক ফলনের জন্য ওই মাঠ বিখ্যাত। বোয়ালজুড়ি খালের চাড়টভাঙ্গা এলাকায় একটি সুইচ গেট বা বাঁধ দিলে বর্ষার মৌসুমে ওই মাঠে পানি প্রবেশ করতে পারবে না। তাছাড়া খাল খনন করলে ওই খালের পানি সেচ মৌসুমে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে কৃষকদের ধান ফলন ও সংগ্রহ করা সহজ হবে। বিলের মধ্যখানে হার্ভেস্টার মেশিন পাঠানেরও কোন ব্যবস্থা নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোতাছেম বিল্যাহ জানান, কাঠালিয়া বিলের কৃষকদের কথা চিন্তা করে আমরা খালের ভিতর সুইচগেট বা অন্য যে কোন প্রকারে হউক একটি ব্যবস্থা নিব। কৃষকের অধিক ফসল ফলানের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।