মোঃ রাছেল
তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় কচুয়া উপজেলায় রোপা আমন পরবর্তী সময়ে পতিত জমিতে তেলজাতীয় ফসল প্রদর্শনী বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটছে। সাধারণত রোপা আমন কিংবা বোনা আমন কর্তনের পর দুই থেকে আড়াই মাস জমি পতিত থাকে। তারপর জানুয়ারি শেষ দিকে বোরো মৌসুমের চারা রোপণ কার্যক্রম শুরু হয়। এই সময়টিকে অনাবাদি না রাখতেই এই কৌশল অবলম্বন করে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।
চলতি মৌসুমে ১৮০হেক্টর জমিতে সরিষা চাষে লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত হওয়ায় তার মধ্যে ১৬০ হেক্টর সরিষার অবাধ হয়েছে। গত বছর ১৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা অবাদ হয়েছে। দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা এবারও সরিষা চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে পড়ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর প্রত্যেক চাষী অধিক মুনাফা লাভ করবে বলে আশা করছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সোফায়েল হোসেন বলেন, তেল জাতীয় ফসলের বৃদ্ধি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্যাটার্ন ভিত্তিক প্রদর্শনী করা হয়েছে। একই কৃষক সরিষা পরবর্তীতে বোরো ধান এবং আমন ধান করার জন্য উপকরণ পাবে। এই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে ভোজ্য তেল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা। দেশে প্রতিবছর ২৪ হাজার ৮শত কোটি টাকার ভোজ্যতেল আমদানি করা হয়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন, রোপা আমনের ধান কর্তনের পর বোরো ধান রোপণের মাঝে স্বল্পমেয়াদী বারি সরিষা ১৪, বারি সরিষা ১৭ জাতগুলো আবাদ করা যায়। এগুলো ৭৫ দিনের মধ্যেই ফলন এসে যায়, গড় ফলন বিঘা প্রতি ৪-৫ মণ। যা তেল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করবে, পাশাপাশি জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করবে। সরিষা-বোরো-পতিত কিংবা সরিষা-বোরো-বোনা আমন, সরিষা-বোরো-রোপা আমন ক্রপিং প্যাটার্ন ভিত্তিক এই প্রকল্পের আওতায় কচুয়া উপজেলায় বিভিন্ন ব্লকে একাধিক প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
কচুয়া উপজেলার তুলপাই বøকের কৃষক জামাল হোসেন বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের সহয়তায় এই প্রথম আমাদের এলাকায় বøকে প্রদর্শনী করে ৩ একর জমিতে সরিষা আবাদ করেছি, আগামীতে আমাদের কাছ থেকে অনেকেই বীজ নিয়ে আবাদ করবে।
পালাখাল বøকের আষার কোটা গ্রামের স্থানীয় কৃষক আলী মিয়া, আব্দুল রশিদ জানান, গত বছর সরিষা ভালো দাম পাওয়ায় চলতি বছরে সরিষা বেশি অবাদ করেছি। ভালো ফলন হয়েছে অবশ্যই দাম পাবো বলে আশা করছি।
উল্লেখ্য, তেলজাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণ ও আমদানি হ্রাসকল্পে প্রকল্পটি দেশের ২শ ৫০টি উপজেলায় ২০২৫ সাল পর্যন্ত কাজ করবে।