বিল্লাল ঢালী:
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে কচুয়ার স্কুল ছাত্রী জান্নাতুল নাঈম মিশু হত্যা মামলার আসামীদ্বয়। গত ৪ আগস্ট মিশু হত্যা মামলায় জড়িত সন্দেহে সজীব হোসেন ও নুর আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর সজীব স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও নুর আলম টালবাহানা শুরু করে। বাধ্য হয়ে পুলিশ তাকে অধিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করে। রিমান্ডের তিন দিনের মাথায় দ্বিতীয় আসামি নূর আলম মিশু হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। আসামি আদালতে জবানবন্দিতে স্বীকার করেছে ধর্ষণের পর মিশুকে হত্যা করা হয়। যদিও দুই আসামী একে অপরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে।
কচুয়া থানার ভারপ্র্প্তা কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালী উল্লাহ অলি জানানা, একটা ক্লু লেস মামলা আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করেছি। এবং সফলও হয়েছি। আসামীরা আমাদের কাছে যেভাবে দায় স্বীকার করেছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আরো সাবলীল বক্তব্য দিয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জসীট দেয়া সম্ভব হবে।
এদিকে স্কুল ছাত্রী মিশু হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে প্রায় পতিদিন কচুয়ার বিভিন্ন এলাকায় মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সবশেষ স্কুল ছাত্রী মিশু হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবীতে সকালে কচুয়া উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে ও বড় হয়াতপুর গ্রামে মানববন্ধন করেন দরিয়া হয়াতপুর ও ডুমুরিয়া এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা দীপায়ন দাস শুভ ,উপজেলা পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান সুলতানা খানম প্রমুখ। একই দিন রহিমানগর কলেজ গেট প্রাঙ্গণে মানব বন্ধন করেন জাগ্রত তরুণ জনকল্যান সংস্থার পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন সংস্থার সভাপতি ফাহিমুল ইসলাম,সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল আহম্মেদ, গোহট দক্ষিণ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমির উদ্দিন বহি শিখার সাধারন সম্পাদক ফয়সাল প্রধান ,জগ্রত তরুণ জনকল্যান সংস্থার সহ-সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন। বক্তরা মিশু হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য কচুয়া থানার অফিসার ইনর্চাজ ওয়ালী উল্লাহ্ (অলি) কে ধন্যবাদ জানিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
প্রসঙ্গত, জান্নাতুল নাঈম মিশু বড় হায়াতাপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী হানিফের মেয়ে। গত ৩১ জুলাই দুপুরে তার পালিত ছাগলের জন্য ঘাস কাটতে বাড়ির পাশে যায়। কয়েক ঘণ্টা অতিবাহিত হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় তাকে খোঁজাখুঁজি করে পাওয়া যায়নি। পরদিন ১ আগস্ট মিশু নিখোঁজ বিষয়ে কচুয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পরদিন দুপুরে গ্রামের দক্ষিণ পূর্ব পাশের বিলে মিশুর লাশ ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। ৩ আগস্ট মিশুর মা শেফালী বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আসামি হিসেবে নুর আলম ও সজিবকে খুব অল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।