বিশেষ প্রতিনিধি:
চাঁদপুরের কচুয়ার সাচার ডিগ্রি কলেজে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেনীতে কলেজ কর্তৃপক্ষের অগোচরে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই কলেজের আইসিটি শিক্ষক বিপুল কান্তি মালাকার,অফিস সহকারী (কম্পিউটার) হাসিনা আক্তার ও প্রদীপ কুমার ঘোপের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই কলেজের অধ্যক্ষ মো: নুরুল আমিন বাদী হয়ে কচুয়া থানায় একটি জিডি (৯৮৬) দায়ের করেছেন।
থানা জিডি ও একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে চাঁদপুরের কচুয়ার সাচার ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেনীতে চলতি শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞান,মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় মোট ৪শত ৮১জন শিক্ষার্থী আবেদন করে। তন্মধ্যে কলেজ কর্তৃপক্ষ ৩শত ৭৩জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি নিশ্চায়ন করেন। কিন্তু কলেজের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে কে বা কাহারা আরো ১শত ৮ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি নিশ্চিত করায়। বিষয়টি জানাজানি হলে কলেজের ডিজির প্রতিনিধি সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কামরুন্নাহার ভূঁইয়ার মধ্যস্থতায় কলেজ শাখা ছাত্রলীগ ৮০জন শিক্ষার্থীর ভর্তির দায় গ্রহন করলে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভর্তির টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে তাদের ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বাকী ২৮জন শিক্ষার্থীর ভর্তির নিশ্চিতের বিষয়টি কেউ দায় না নেয়ায় অধ্যক্ষ থানায় জিডি করেন।
এব্যাপারে অভিযুক্ত আইসিটি শিক্ষক বিপুল কান্তি মালাকারের মুঠোফোনে বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
অফিস সহকারী হাসিনা আক্তার জানান, কে বা কাহারা কলেজের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে বহিরাগত লোক দিয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করিয়েছে বিষয়চি আমি জানি না। তিনি আরো বলেন, আমি শুধু ভর্তির টাকা নেই কিন্তু ভর্তির বিষয়টি দেখেন অফিস সহায়ক প্রদীপ কুমার ঘোপ। তবে প্রদীপ কুমার ঘোপ ওই শিক্ষার্থীদের ভর্তির বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।
কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাসেল দাবী করেন ৮০জন হতদরিদ্র শিক্ষার্থী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছে ভর্তির টাকা ও কাগজপত্র জমা দেন। পরে কলেজের ডিজির প্রতিনিধি সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন্নাহার ভূঁইয়ার মধ্যস্থতায় শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করাই।
কলেজের অধ্যক্ষ মো: নুরুল আমিন বলেন, কে বা কাহারা আমার কলেজের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সার্ভারের মাধ্যমে অতিরিক্ত শিক্ষার্থীদের ভর্তি করিয়েছে। তা খুজে বের করার অনুসন্ধান চলছে। কীভাবে অন্যরা কলেজের গোপন পাসওয়ার্ড পেল এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো স্বদত্তর দিতে পারেননি।
কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুস সালাম বলেন, কলেজে ভর্তির পাসওয়ার্ডটি শুধুমাত্র কলেজের অধ্যক্ষের কাছে সংরক্ষিত থাকার কথা। কিভাবে অন্যরা কলেজের পাসওয়ার্ডটি পেল সেটি তদন্তের বিষয়। অধ্যক্ষ থানা জিডি করে থাকলে বিষয়টি বোর্ডকে জানানো কথা কিন্তু অদ্যবধি কলেজ কর্তৃপক্ষ বোর্ডকে জানায়নি। পুরো বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপায়ন দাস শুভ বলেন, এটি একটি গুরুতর অপরাধের বিষয়। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য, সাচার ডিগ্রি কলেজে ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষকের অবহলোয় ৮৪জন শিক্ষার্থী ডিগ্রি প্রথম বর্ষে ভর্তি হতে পারেননি। কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় বারবার এজাতীয় ঘটনা ঘটছে বলে দাবী সচেতন মহলের।
আজ,
সোমবার , ২৯ মে, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ , ১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।