সম্পাদকীয়
পরীক্ষা তো পরীক্ষাই। পরীক্ষা দিতে পথ পাড়ি দেওয়ার সময় যদি উৎকণ্ঠায় পথ পাড়ি দিতে হয় তাহলে তো তার পরীক্ষা পথেই হয়ে যায়। উৎকণ্ঠার মানসিকতা নিয়ে পরীক্ষার পথে রওনা হওয়া আরো বড় পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। এতে করে মানসিক পরিস্থিতি একেবারেই ভেঙে পড়ে। আশানুরূপ ভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে ২৪ ফেব্রুয়ারি দৈনিক শপথ পত্রিকা খবর প্রকাশ করেছে ‘পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছাতে পারি দিতে হয় উত্তাল মেঘনা’ এই পরিস্থিতির শিকার হাইমচর উপজেলা ঈশানবালা এজেএম উচ্চ বিদ্যালয়ের জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য দুর্গম মেঘনা নদীর পথ পাড়ি দিয়ে উপজেলা সদরে আসতে হয়। হাইমচর উপজেলার চরাঞ্চলের মানুষের বসবাসের স্থান থেকে প্রায় সাড়ে আটশ শিক্ষার্থী ঈশানবালা উচ্চ বিদ্যালয় অধ্যায়ন করে। প্রতিবছর এদের সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য ভয়াবহ উত্তাল নদী মেঘনার বুকে আতঙ্কগ্রস্থ হৃদয় নিয়ে উপজেলা সদরে আসাটা দীর্ঘসময় পরে খবরের কাগজে উঠলে কতটুকু বাস্তবসম্মত শিক্ষা অধিদপ্তর তত্ত্বাধান করে তা অনুমান করা যায়। পরিতাপের বিষয় হল আধুনিক আধুনিকায়ন ডিজিটাল এবং ডিজিটালাইজেশনের যুগে এসে ডিজিটাল শব্দের বুলি আওড়ানো আর বাস্তবতার নিরিখে পর্যবেক্ষণে যে তফাৎ ফারাক বিদ্যমান এটা কোনোভাবেই অমূলক নয়। এমন পরিস্থিতি বিশেষ করে নদী অঞ্চলের মানুষের জীবন যাপন জীবনযাত্রার মান রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন কার্যকলাপ এ অংশগ্রহণ চিকিৎসা ক্ষেত্রে মানুষের উপজেলা সদর হাসপাতালে গমনাগমন এমন পরিস্থিতিটা অবশ্যই কর্তৃপক্ষের নজরে আসার কথা ছিল। তবে নদী অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের জন্য উপজেলা সদরের সাথে অন্তত সর্বোচ্চ নিরাপত্তামূলক যানবাহন ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এটা উপজেলার চরাঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রার মান আর সামগ্রিক দেশের মানুষের জীবন যাত্রার মান অনুমান করলে সরকারের ব্যয় চরাঞ্চলের মানুষের উপর তেমন করা হয় কি? প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা ইউনিয়ন পর্যায়ে থাকলেও এ সমস্ত বিষয়গুলি আঞ্চলিক সরকারের নির্বাচিত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান উপজেলা চেয়ারম্যান এবং সংসদ সদস্য গুরুত্বের সহিত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার আশা করছিল। এলাকার জনগণের জীবনযাত্রার মান যেমনই হোক কিন্তু শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ব্যাপারে এই বিষয়টা মেনে নেওয়া কষ্টকর বলেই এলাকার জনগণের দাবি। বিশেষ মহলের সচেতন মানুষের মাঝে এই বিষয়টা নিয়ে দারুণ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তাই জনগণের বিশেষ করে চরাঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে গতি থাকা দরকার সেটা যদিও সম্ভব না হয়ে থাকে তবে এমন শিক্ষা কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করার জন্য নির্বিঘ্নে যাতায়াত করে পরীক্ষা কেন্দ্রে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণ করা জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা করার জন্য এলাকার লোকজন জোর দাবি জানাচ্ছি।