রিয়াজ শাওন:
প্রকৃতির দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। রাতে পড়ছে কুয়াশা আর লাগছে ঠান্ডা অনুভব। প্রকৃতি নিজ থেকে জানান দিচ্ছে আসছে নতুন ঋতু শীত। যদিও বর্তমানে চলছে কার্তিক মাস। কার্তিককে বলা হয় বর্ষা আর শীতের মিলন ক্ষণ। কারণ কার্তিক হচ্ছে বর্ষার পরের আগত ঋতু হেমন্তের প্রথম মাস।
এই সময়ে বাংলাদেশের প্রকৃতিতে প্রগাঢ় সবুজ যেমন পাওয়া যায়, তেমনি পাওয়া যায় শীতের মিষ্টি আমেজও। গ্রীষ্মের মাটি ফাঁটানো দাবদাহ নেই, বর্ষার অঝোর ধারায় ভিজে যাওয়া বা কাঁদা নেই, আর হাড় কাঁপানো শীত যে মাসে নেই তারই নাম কার্তিক।
কবি জীবনানন্দের ভাষায় নবান্নের কার্তিক। তিনি লেখেন, ‘আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে এই বাংলায়/হয়তো মানুষ নয় হয়তোবা শাঁখচিল শালিকের বেশে, হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে/ কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব কাঁঠাল ছায়ায়।’
কার্তিক হচ্ছে, দুই ঋতুর মোহনা। এ কারণেই, বাংলাদেশের প্রাণ ও প্রকৃতি দেখার সবচেয়ে সুন্দর সময় এই কার্তিক। এ মাসের তাপমাত্রাও থাকে খুব আরামপ্রদ। হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া নেই, সারাদিন থমথমে গুমোট মেঘলা আকাশ নেই, গ্রীষ্মের গরম নেই, শীতের কনকনে ঠান্ডার সমস্যাও নেই।
এই কার্তিক মাসেই পড়তে শুরু করেছে কুয়াশা। আর এই কুয়াশা ধানের শীষে জমে হচ্ছে শিশির। আবহমানকাল থেকে কমনীয়তার প্রতীক শিশির। ভোরের কাঁচা রোদ, মৃদু হিমস্পর্শ প্রাণে শিহরণ জাগায়। বাংলাদেশে হেমন্ত আসে ধীর পদক্ষেপে। শীতের পরশ আলতো করে গায়ে মেখে। হেমন্তের ফসল কাটাকে কেন্দ্র করেই নবান্ন উৎসবের সূচনা হয়। হেমন্তের প্রথম মাস কার্তিকে ধানে পাক ধরে। কার্তিকের শেষ দিকে গ্রামের মাঠে মাঠে ধান কাটার ধুম পড়ে যায়। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে পাকা ধানের গন্ধে মৌ মৌ গন্ধ।