স্টাফ রিপোর্টার
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ২নং বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের সচিব রাজীব চন্দ্র ভক্ত কয়েকদিন যাবৎ ইউনিয়ন পরিষদে অনুপস্থিত রয়েছেন। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পরিষদে সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ। গতকাল বুধবার এমনটাই অভিযোগ করেন পরিষদে জন্ম নিবন্ধন ও বিভিন্ন সনদ নিতে আসা জনসাধারণের।
যদিও পরিষদে অনুপস্থিত থাকার কারণ হিসেবে নিজেকে করোনা পজিটিভ বলে দাবি করেন তিনি। সেক্ষেত্রে তিনি গত রোববার থেকে আসতে না পারার কথা। তবে স্থানীয় ও ভুক্তভোগীদের দাবি গত ২-৩ মাস যাবত তিনি পরিষদে নিয়মিত আসেন না। যার জন্য পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবি তাদের।
সেবা থেকে বঞ্চিত ভুক্তভোগী ৬নং ওয়ার্ডের এমএ ওয়াদুদ বলেন, গত তিন-চার দিন যাবত ইউনিয়ন পরিষদে আসলেও সচিবের কোন দেখা পাই নাই। পোলাপাইনের ভর্তি করানের লাইগা জন্ম নিবন্ধন কাগজ দরকার। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদে আসলে আমগোরে ফরিদগঞ্জ পাঠায়। আমরা পরিষদে সেবার জন্য আসছি ফরিদগঞ্জে যামু কিলিগ্গা। এই হয়রানি থাইকা কবে মুক্তি পামু?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী মহিলা বলেন, আমি একটি জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য আসছিলাম। এসে দেখি পরিষদের সচিব নেই। দশ বারো দিন আগে সংশোধন করার জন্য দিয়েছিলাম। এ পর্যন্ত পাঁচ-ছয় বার এসেও কাগজ পাইনি। কম্পিউটার রুম থেকে বলে কাগজ নিয়ে ফরিদগঞ্জে যেতে হবে। এভাবে আমরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছি।
এছাড়াও ইউনিয়নের সেবা না পাওয়া মানিক, মাসুদ, ফরিদা ইয়াসমিনসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো অনেকেই অভিযোগ করেন। তিনি গত দুই তিন মাস ধরে অফিসে সঠিক সময়ে আসছেন না। সঠিক সময়ে পরিষদে না আসায় পরিষদে আসা জনসাধারণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
এ বিষয়ে সচিব রাজীব চন্দ্র ভক্তের সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি জানান, আমি গত রোববার থেকে করোনা পজিটিভ হওয়ায় অসুস্থ। যার কারণে অফিসে আসতে পারছি না এবং অসুস্থতার বিষয়টি আমি ইউএনও মহোদয়কে অবহিত করেছি।
ইউপি চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশীদ বলেন, আমি গত তিন-চার দিন সচিবকে পরিষদে পাচ্ছি না। প্রতিনিয়ত সাধারণ জনগণ আমাকে কল দিয়ে অভিযোগ করছে। সচিবের অনুপস্থিতির কারণে স্বাক্ষর থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। প্রতিটি কাজের জন্য দশ পনেরো দিন আসার পরিপ্রেক্ষিতেও কোন সমাধান পাচ্ছে না তারা। তিনি কার কাছ থেকে ছুটি নিয়েছেন সে বিষয়ে আমি অবগত নই। গতকাল যোগাযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমাকে তিনি অসুস্থতার কথা বলেন। মূল কথা হচ্ছে সচিবদের ইউনিয়ন পরিষদের সবসময় থাকাটা আবশ্যক। আমি চাইনা আমার পরিষদে সচিবের কারণে কোন মানুষ সেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হোক।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলি হরির সাথে মুঠোফোনে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন, তিনি করোনা পজেটিভ এ বিষয়ে আমাকে অবগত করেছে। তবে উনি বিষয়টি আমাকে মৌখিক জানালেও কোন ছুটির আবেদন করেনি।