রিয়াজ শাওন:
এক সময় বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালী দিন ছিলো। সেই সোনালী দিনগুলো আরো রঙিন হয়ে উঠেছে কিছু অভিনেতার নিপুণ অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে। তাদেরই একজন হল জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা দিলদার হোসেন পাটোয়ারী। আশি ও নব্বই দশকের চলচ্চিত্রে যার উপস্থিতি মানে বিরামহীন হাসি। তার অভিনয় দেখে দুঃখ ভুলেছেন কোটি কোটি দর্শক।
কিংবদন্তি এই অভিনেতার আজ ১৮ তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৩ সালের ১৩ জুলাই তিনি মৃত্যুরবণ করেন। যে মানুষটি এক সময় সবাইকে হাসিয়ে দুঃখ ভুলিয়ে দিতেন আজ সেই মানুষটির মৃত্যুবার্ষিকী কেটেছে নিভৃতে। চলচ্চিত্র অঙ্গনেও নেই কোন উৎসব।
জনপ্রিয় এই অভিনেতা ১৮৪৫ সালের ১৩ জানুয়ারি বর্তমান চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহামুদপুর ইউনিয়নের শাহতলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনিই সবার বড় ছিলেন। তিনি এসএসসি পাস করার পর পড়ালেখা ছেড়ে দেন। দিলদার হোসেন পাটোয়ারীর স্ত্রীর নাম রোকেয়া বেগম। এই দম্পতির দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে মাসুমা আক্তার যিনি পেশায় দাঁতের ডাক্তার। আর ছোট মেয়ে জিনিয়া আফরোজ।
দিলদার হোসেন পাটোয়ারী ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে ‘কেন এমন হয়’ ছবিতে অভিনয় দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। তিনি ২০০৩ সালে সেরা কৌতুক অভিনেতা হিসেবে তুমি শুধু আমার চলচ্চিত্রের জন্যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ারে ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ ‘বিক্ষোভ’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘কন্যাদান’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘শুধু তুমি’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘অজান্তে’, ‘প্রিয়জন’, ‘প্রাণের চেয়ে প্রিয়’, ‘নাচনেওয়ালীসহ অসংখ্য জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করেন।
এক সময় যে ছবিতে দিলদার নেই সে ছবি সফল না হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ত। তার জনপ্রিয়তা এতোটাই আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে যেন তাকে নায়ক করে নির্মাণ করা হয় ‘আব্দুল্লাহ’ নামে একটি চলচ্চিত্রে। তার বিপরীতে অভিনেত্রী ছিলেন নূতন। ছবিটি সফল হয়। বিশেষকরে এর গানগুলো দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এই কিংবদন্তি জন্ম কিংবা মৃত্যুবার্ষিকীতে নেই কোন উৎসব। চলচ্চিত্র অঙ্গনে কোন অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয় না। জন্মদিন কিংবা মৃত্যুবার্ষিকী চলে যায় নিভৃতে। তবে বর্তমান বাংলা চলচ্চিত্র অঙ্গনে অভিনেতা দিলদার হোসেনের কোন কদর না থাকলেও লাখ লাখ ভক্তের হৃদয়ে আজও সযত্নে বসবাস করেন কৌতুক অভিনেতা দিলদার হোসেন পাটোয়ারী।