বিশেষ প্রতিনিধি :
২০২১ সালের জুলাই কিংবা আগস্টে শুরু হতে পারে চাঁদপুর আধুনিক নৌ টার্মিনালের নির্মাণ কাজ। ইতোমধ্যে নকশা তৈরি হয়ে গেছে। এখন ডিজাইন ডকুমেন্ট তৈরির কাজ চলছে। সব ঠিক থাকলে আগামী মার্চের দিকে টেন্ডার হতে পারে বলে মুঠোফোনে দৈনিক শপথ-কে জানালেন আধুনিক নৌ টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক (উপ-প্রধান প্রকৌশলী) ফরহাদুজ্জামান। তিনি আরো জানান, নানান কারণে কিছু সময় কালক্ষেপণ হলেও আশা করছি সব কিছু পরিকল্পনা মাফিকই হবে।
২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর শহরের মাদ্রাসা রোডে আধুনিক নৌ টার্মিণাল নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পেলেও কাজ টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হওয়ায় কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। অথচ তরিঘরি করে গত ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন।
এদিকে অস্থায়ী নৌ টার্মিনালকে স্থায়ী ঘোষণা করা হলেও যাত্রীদের নেই কোন সুযোগ সুবিধা। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ঢাকা চাঁদপুরসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রী। বর্তমান লঞ্চঘাটটি ২.৪৮ একর জমির উপর অবস্থিত রয়েছে। এই জমির সাথে আরো দেড় একরসহ প্রায় ৪একর জমির উপর দ্বিতল ভবনের এই লঞ্চঘাটটি নির্মাণ করা হবে। প্রায় দুই বছর গবেষণার পর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারীর দিকে রির্পোট দেয়া হয়। ২০২২ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ারও কথা রয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় ২.৪৮ একর জায়গায় ৫০ কোটি ২৪ লাখ টাকায় তৈরি হবে আধুনিক নৌ টার্মিনাল। কাজ চলাকালীন সময়ে যদি আরো ভূমির প্রয়োজন হবে তা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একোয়ারের উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও জানা গেছে।
চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ-এর উপ-পরিচালক কায়সারুল ইসলাম জানান, সবকিছু ঠিকঠাকমতোই আগাচ্ছে। আশা করি জুলাইয়ের মধ্যেই কাজ শুরু হবে। এর মাঝেই সকল আনুসাঙ্গিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
জানা যায়, দুইশ’ বছর আগে ডাকাতিয়া-মেঘনা নদীর তীরে চাঁদপুর নদী বন্দর স্থাপিত হয়। এরপর ২০০০ সালে হঠাৎ নদীভাঙনে বিলীন হয়ে যায় লঞ্চঘাট। এরপর থেকে আজো একটি স্থায়ী নৌ টার্মিনাল নির্মাণ সম্ভব হয়ে উঠেনি। চাঁদপুর মাদ্রাসা রোড অস্থায়ী নৌ-টার্মিনাল দিয়ে চাঁদপুর-ঢাকা ও চাঁদপুর-নারায়নগঞ্জসহ দক্ষিণাঞ্চলের নৌ পথে প্রতিদিন চলাচল করে প্রায় একশ ছোট বড় লঞ্চ। বন্দর কর্তৃপক্ষ ঘাটে প্রবেশ ফি জনপ্রতি ১০ টাকা নিলেও যাত্রী সেবার নামমাত্রও সুযোগ সুবিধাও নেই। অথচ প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী এ ঘাট দিয়ে যাতায়াত করে। ঘাটে টয়লেট নেই, নেই এতটুকু বসার স্থান, তাই যাত্রীদের সাথে একমত পোষণ করেন লঞ্চ মালিক প্রতিনিধিরাও।
ব্রিটিশ শাসন আমলে আইজি এন্ড আরসিন কোম্পানী ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে স্টিমার ঘাট এবং রেলওয়ে স্টেশন প্রতিষ্ঠা করে চাঁদপুর নৌ-বন্দরের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করে। তখন অবিভক্ত বাংলার সাথে আসাম-বেঙ্গল সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা এ নদী বন্দরকে ঘিরেই গড়ে উঠে। বর্তমানে চাঁদপুরসহ লক্ষীপুর, নোয়াখালী, ভোলা বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ চাঁদপুর নৌ টার্মিনাল ব্যবহার করে। তাই দেশের অন্যতম এই নৌ টার্মিণাল যত দ্রুত সম্ভব আধুনিকায়ন করা হয় এমনটাই প্রত্যাশা সবার।