মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ
—————*————-*————–*——–*——-
আমি মাঝে মাঝে ঢাকা যাই অফিসিয়াল ট্রেনিং অথবা অফিসিয়াল কাজে।ফিল্ড লেবেলে কাজের ব্যস্ততা অথবা থাকার অসুবিধার কারনেই হোক হাতে কম সময় নিয়ে ঢাকায় যাওয়া হয়। যদিও একটু লম্বা ট্রেনিং হলে কিছু প্রিয় বন্ধুর উপর উটকু ঝামেলা হয়ে গায়ে পড়ি।হাতে সময় কম থাকার কারনে একটু বেশি খরচ হলেও এখন উবারই প্রথম পছন্দ। মনে হয় হাতের মুঠোয়ে সেবা, দাম দরের কোন ঝামেলা নেই। উঠুন এবং সময় মত গন্তব্যে পৌঁছে যান।হঠাৎ কিছু সময়ে লক্ষ্য করি কিছু তরুন চালক হেলমেটের ভিতর মোবাইল ডুকিয়ে কখনও তার প্রিয় মায়ের সাথে কত সুন্দর করে কথা বলছে। কখনও প্রিয়তমার সাথে, প্রিয় ভাই বোনের সাথে অথবা প্রেমিকার সাথে! এখান থেকে ইনকাম করে মায়ের জন্য রঙিন শাড়ি কিনবে, প্রিয়তমাকে বলছে সন্তানের প্রিয় খেলনাটির কথা।ভাইকে বলছে ম্যাচের খরচ পাঠাবে, বোনকে বলছে তার প্রিয় থ্রি পিছটার কথা আর প্রেমিকার ছোট ছোট কত চাওয়া! তুমি আসো না, দেখা হয় না! কি দিবে চুড়ি দিবে না নূপুর দিবে।সেই ও প্রেমিকাকে শুনায় তার মায়ের গুনের কথা।জানো, “মা” আমাদের সংসারে কত জনের রান্না করতো! হয়ত হবু বউকে একটু সংসারি করার চেষ্টা। আমিও হেলমেট মাথায় দিয়ে ভাবি কত স্বপ্নের দ্বার উন্মুক্ত করেছে এই একটি অ্যাপস। হেলমেট দুজনকেই মাথায় দিতে হবে কারন নিজেদের নিরাপত্তা ও ট্র্যাপিক পুলিশের ভয় আছে।এগুলো হল ইনোভেশন একটু মেধা খাটালেই আমাদের মেধাবী যুবক-যুবতীরা কত কিছু করতে পারে! হোক না সেটা ধার করা তবুতো কত মানুষের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। কত মানুষের উপকার হয়েছে।সৎ ভাবে পরিশ্রম করে বেঁচে থাকার দ্বার খুলেছে।
তাইতো কবি আহসান হাবীবের “ইচ্ছে” ছড়ার মত কত তরুন কত স্বপ্ন দেখেঃ
মনারে মনা কোথায় যাস?
বিলের ধারে কাটব ঘাস।
বোনকে দেব পাটের শাড়ি,
মাকে দেব রঙ্গিন হাঁড়ি।
কবির ছড়ার মতোঃ মায়ের জন্য রঙিন হাঁড়ি এবং বোনকে গোলাপি শাড়ি দিতে চায় আজকের তরুনরাই। তখনকার মনা ঘাস কাটলেও, এখনকার মনারা অনেক বেশি প্রযুক্তিমুখী ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন।প্রযুক্তি জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে তারা কিছু করতে চায়,ভালো থাকতে চায়। ঘরে বসেই হাজার হাজার যুবক-যুবতী ফ্রিল্যান্সিং করে সংসারের হাল ধরছে এবং ধরতে চায়। যদিও সবার স্বপ্ন এক তা কেবল প্রিয়জনের মুখে হাসি ফোটানো। শত যুবক কাজ চাচ্ছে হয়ত কাজ পাচ্ছে না কিন্তু এভাবেই প্রযুক্তি মাধ্যমেই তাদের কর্মের ব্যবস্থা হচ্ছে। টেকনোলজিক্যাল অনেক সমস্যার মাঝেও আমরা এগিয়ে চলছি সামনের দিকে স্বপ্ন পূরণের নিমিত্তে। ক্লাইন্টের গোপনীয় তথ্য এবং চালকও যাত্রীর নিরাপত্তা ঠিক রাখা অতিজরুরী তবে কঠিন পলিসির মার-প্যাঁচে ফেলে যাতে এমন উদীয়মান উদ্যাগগুলিকে থামিয়ে দেয়া না হয়।আমরা যদি মেধা ও শ্রমকে লালন করি তাহলে আমাদের দেশেও গুগুল, ফেইসবুকের মত এমন বড় বড় কোম্পানির সৃষ্টি হবে যা করবে আমাদের আগামী প্রজন্মই।হয়ত বাসা বাড়ি,অফিস আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কলকারখানার ছোট খাট সকল ধরনের কাজও কেউ দিবে এবং কেউ করবে এই রকম অ্যাপসের মাধ্যমেই। এই ধরনের উদ্যাগকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে,কাজকে সম্মান করতে হবে আমাদের সকলকেই।তাহলেই আমরা জাতি হিসেব সমৃদ্ধ হতে পারবো।লাখো তরুন কর্ম পাবে,বাঁচবে প্রতিটি পরিবার।হাসি ফুটবে প্রতিটি মুখে। আমরা পাব সুখী, সমৃদ্ধ স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ।
আইসিটির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাজ করুন।
ঘরেই থাকুন
নিরাপদে থাকুন।
লেখকঃ
বিএসসি ইন টেলিকম. এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (হাবিপ্রবি)
ইএমসিএ-অধ্যয়নরত (কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়) সহকারী প্রোগ্রামার, চাঁদপুর সদর, চাঁদপুর
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর।
E-mail: haruntee@gmail.com