ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি কামরুজ্জামান বাবার স্মৃতিচারন করতে গিয়ে বাবার রেখে যাওয়া স্মৃতি তুলে ধরেন। একান্ত আলাপচারিতায় শপথের ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি আবদুস সালামের সাথে তিনি বলেন, আমরা ভাই বোনের সংখ্যা কম ছিলাম না তাও গুনতে গেলে ১০ জন, অনেকে এটা শুনে তো চোখ চানা বড়া হয়ে যেত। বাবা যখন ছিল তখন বাবাদের ভালবাসা কি জিনিস সেটা বুজতাম না। এক দিন বাবা বাজারে গেলেন আমাকে নিয়ে হঠাৎ এক ব্যক্তি এসে বললেন ডাঃ সাহেব আজ আমার বাড়ি মেহমান আসবে কিন্তু হাতে টাকা নেই কি করবো এমন কথা শুনে বাবা থেমে থাকতে পারেন নি। সাথে সাথে নিজের বাজার বাদ দিয়ে মাছ, মুরগি, চাল যা কিছু দরকার ছিল সব কিনে দিলেন। যে দিন বাবা ওই ব্যক্তিকে বাজার করে দিলেন। সে দিন কিন্তু আমাদের বাজার করা প্রয়োজন অনুযায়ী করা হয়নি। ওই দিন বাবার প্রতি খুব রাগ করেছিলাম।
জেনে রাখা ভাল আমার বাবা ছিলেন ফরিদগঞ্জের চেয়ারম্যান, ফরিদগঞ্জ পৌরসভা হওয়ার পূর্বে চেয়ারম্যান ছিলেন, বাবার নাম ছিল মোঃ ফয়েজ, হোমিওপ্যাথি ডাঃ হওয়ায় সবাই তাকে ফয়েজ ডাঃ নামে ডাকতো, এমন হাজার স্মৃতি বুকে ধারন করে ছলছি, আজ খুব বেশী বাবা কে মনে পড়ে।
এখন কিন্তু চাইলেই বাবাকে কিছু কিনে দিতে কিংবা খাওয়াতে পারছিনা। এর থেকে বেশী কষ্ট কিছুই হতে পারে না। বাবা যখন খুব বেশী অসুস্থ ছিলেন আমি ও বাবার কাছে ছিলাম ডাঃ এর পরামর্শে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গিয়েছিলাম।
একদিন বাবাকে জড়িয়ে ধরার স্মৃতি মনে পড়ে, ভাই বোন বেশি থাকা সে সময় অধিকাংশ মানুষের হাতেই টাকা পয়সা খুব একটা বেশী থাকতো না। আমাদের পরিবারেও এর ব্যতিক্রম ছিল না।
আমার মন খুব উদাসিন তাই কখনো এক জায়গায় থাকতো না। কখনো চিনে ব্যবসা করতাম আবার কখনো মালেশিয়ায়, আবার মনে হলে ভারত, কোরিয়া, ইউরোপের অনেক দেশে ভ্রমন করতাম, বাবা আমার এমন ঘুরাঘুরির কারনে তো ডেকে এনে একাকী থাকার ব্যবস্থা চিরতরে বন্ধ করে দিলেন। আজ সেই সঙী নিয়েই জীবন ছলছে। আজ তো বাবা চির নিদ্রায় আছেন। বাবাকে মনে পড়ে, মাঝে মাঝে মনে হয় অনেক কাদতে ইচ্ছে করে।
আর বলি বাবা আমাকে ক্ষমা করো। পড়ালেখায় অমনোযোগী হলেই বাবা একটা কথা বলতেন তা আমার সারাজীবন মনে থাকবে। আর বাবার এই উক্তি প্রায় মানুষকে বলি।
‘আজ বুজবি না বুজবি কাল
মাথা থাবড়াইবি দিবি গাইল’