সুমন আহমেদ:
চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনীসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ৫০ বছরের দাবি ছিল মতলব-গজারিয়া সেতু নির্মাণের। অবশেষে এসব অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের অংশবিশেষ ও মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ও গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের অংশবিশেষে মেঘনা নদীর উপর সেতুটি এটি নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সেতু নির্মাণের জন্য সয়েল টেস্ট ভূতাত্ত্বিক পরীক্ষা, সেতুর ডিজাইন, পরিবীক্ষণ, তদারকি উপদেষ্টা ফার্মের প্রার্থমিক কাজ শেষ হয়েছে বলে একটি বিশেষ সুত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য এড. নুরুল আমিন রুহুল জনপ্রতিনিধি হিসেবে ২০১৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সেতুটি নির্মাণে পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২ নভেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪৮০ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুটি নির্মাণ, জমি অধিগ্রহণ ও আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণে আরও ৫০ কোটি টাকার বরাদ্ধের প্রস্তাব দেওয়া হয় সেতু মন্ত্রণালয়ে।
সেতুর নকশা: সেতুর নকশা হবে স্টিল ফ্র্রেম এর উপর কংক্রিট ঢালাই। একটি উন্নত দেশের নদীর উপর নির্মিত সেতুর নকশা অনুসরণে প্রণয়ন করা হবে। সেতুর নকশা এমনভাবে করা হয়েছে যেন নদীর নাব্যতা পানির প্রবাহ কোন চলাচলে বাধা সৃষ্টি না হয়। সেতুটি হবে দৃষ্টিনন্দন যা একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে এলাকার মানুষ উপভোগ করতে পারবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সুফল: ঢাকা থেকে গৌরীপুর, মতলব উত্তর উপজেলা সদর ও চাঁদপুর জেলা সদরের বর্তমান দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার। কিন্তু ঢাকা থেকে ভবেরচর হয়ে গজারিয়া উপজেলার সীমানার উপর দিয়ে যদি প্রস্তাবিত সেতু নির্মিত হয় তাহলে চাঁদপুর জেলা সদরের দূরত্ব হবে সর্বোচ্চ ৬৮ কিলোমিটার। ফলে ঢাকা-চাঁদপুর জেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ৫২ কিলোমিটার সড়ক পথ কমে যাবে। এতে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের ভ্রমণ ব্যয় কমবে, একই সাথে ভ্রমণ সময়ও কমবে প্রায় এক ঘন্টা।
বর্তমানে ঢাকা থেকে চাঁদপুর জেলা সদরের যেতে প্রায় ৩ ঘন্টা সময় প্রয়োজন হয়। তবে সেতু নির্মিত হলে এ সময় ২ ঘন্টায় নেমে আসবে। ফলে চাঁদপুরগামী মানুষসহ মালামাল পরিবহনের প্রচুর অর্থের সাশ্রয় হবে। এছাড়াও সেতুটি নির্মিত হলে চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, শরীয়তপুর এবং চট্টগ্রামসহ অন্য জেলার সাথে যাতায়াতের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
এ প্রসঙ্গে চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন বলেন, অনেক বছর ধরে মেঘনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি করেন এলাকাবাসী। এখন এটির বাস্তবায়ন হচ্ছে দেখে আমি আনন্দিত। তিনি বলেন, মতলব ও গজারিয়ার মেঘনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ হলে শুধু চাঁদপুরই নয়, সড়কপথে বৃহত্তর নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষজন দ্রুত সময়ে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সিলেটে পৌঁছতে পারবেন।