তুহিন ফয়েজ/সুমন আহমেদ:
মতলব উত্তর উপজেলা বিষপানে আত্মহত্যা করেছে অপ্রাপ্তবয়স্ক এক প্রেমিক যুগল। গত শনিবার রাতে উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের কাশিমনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তাঁরা সম্পর্কের মামাতো ফুফাতো ভাই।
মৃত প্রেমিক যুগল হলো: ইউনিয়নের কাশিমনগর গ্রামের মোঃ মোহনের স্কুল পড়ুয়া কিশোরী ফাহিমা (১২), প্রেমিক তার ফুফাতো ভাই ও একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী কলস ভাঙ্গা গ্রামের প্রধানীয়া বাড়ির মৃত হান্নান প্রধানের ছেলে নিলয় (১৬)। মৃত দু’জনেই ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন আগে নিলয়ের বাবা মারা যাওয়ায় মায়ের সাথে সে নানার বাড়িতে বসবাস করে। একপর্যায়ে তার মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে হলে সে তার নানার বাড়িতে অর্থাৎ তার মামার বাড়িতেই থাকতো। এরই প্রেক্ষিতে ফাহিমা ও নিলয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
অপরদিকে প্রেমিকা ফাহিমার বাবা মোহন ফরাজি চারটি বিয়ে করেন। মেয়ে ফাহিমা তার তৃতীয় সংসারের ইয়ারুন নেছার মেয়ে। ইয়ারুনের সাথে মোহনের বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ায় ফাহিমা তার বাবার সংসারেই থাকতো। তবে তার নানার বাড়ি পাশের গ্রাম জঙ্গল ইসলামাবাদ গ্রামেও যাওয়া আসা ছিল। তারপর থেকে সে তার সৎ মায়ের সংসারে বড় হয়।
পুলিশ জানায়, নিলয়ের মা অন্যত্র স্বামীর বাড়িতে থাকায় ও প্রেমিকা ফাহিমার মা তার বাবার বাড়িতে যাওয়ায় এদিন ঘর খালি ছিল। এসময় তাদের মধ্যে প্রেম সম্পর্কিত যে কোন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয়। সেজন্য তারা দুইজনেই কীটনাশক জাতীয় কিছু পান করে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে ফাহিমা ও চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে দাউদকান্দিতে নিলয় মারা যায়।
অদিকে এমন মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আত্মহত্যার পেছনে অন্য কোন উদ্দেশ্য বা রহস্য রয়েছে কিনা প্রশাসনের প্রতি তার জন্য গভীর তদন্তের দাবি জানিয়েছের এলাকাবাসী।
দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেন ওপেল বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি এবং স্থানীয় মেম্বারকে খোঁজখবর নেয়ার জন্য বলেছি।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল জানান, মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অপমৃত্যু বলা হলেও আমরা আগামীকাল ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠাবো। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।