সম্পাদকীয়
সংস্কৃতি হলো ইতিহাস-ঐতিহ্যের লালনের পদ্ধতি। এই সংস্কৃতি মানুষকে বর্তমান সময়ে পৃথিবীতে বিশেষ করে বাংলাদেশ বিপথগামীতার মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। সেই সংস্কৃতির উদ্ভাবন কিন্তু উদ্দেশ্য এটা ছিল না। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংস্কৃতি হয়ে গেছে এক ধরনের বেহায়াপনার স্বীকৃতী মাধ্যম। সংস্কৃতির উপর ভর করে সমগ্র দেশের বিভিন্ন মতাবলম্বী মানুষ সংস্কৃতিকে একটা মাধ্যম করে অপসংস্কৃতি অপরাধমূলক নীতি-নৈতিকতা বহির্ভূত কর্মগুলোকে একটা কাঠামোতে নিয়ে আসছে। অপসংস্কৃতির দায়ভার মূল সংস্কৃতি কখনো নিবেনা। মূল সংস্কৃতির সংকটের দায়বদ্ধতা সমগ্র জাতির। ফলে অপসংস্কৃতি দায়ভার সমগ্র জাতিকেই নিতে হবে। ২০ মার্চ দৈনিক শপথ পত্রিকায় প্রকাশিত চাঁদপুর জেলার সম্মানিত জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ একটি উদৃতি দিয়ে বলেছেন অপসংস্কৃতির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। সম্মানিত জেলা প্রশাসক তিনি যে আলোচনা করেছেন যে বক্তব্য দিয়েছেন অপসংস্কৃতি সম্পর্কে অপসংস্কৃতির প্রচার-প্রসার একদিনে দুইদিনে হয়নি। সংস্কৃতি প্রতিটা মানুষের সামাজিক বসবাসের ক্ষেত্রে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। কিন্তু সেকালের সংস্কৃতিতে ছিল জীবন প্রাণ সঞ্জীবনী উচ্ছ¡াস কর্ম উদ্দীপনা সামাজিক বৈষম্য দূর করার পদ্ধতি মিলেমিশে থাকার পদ্ধতি। সংস্কৃতির এই পরিবেশ-পরিস্থিতিকে দিনে দিনে এক ধরনের অপরাধমূলক মানসিকতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। সংস্কৃতির আবরণে এখন অনেক দুষ্কৃতী কর্ম ঢালাওভাবে রয়ে গেছে যা সমাজকে ভেতর থেকে পুরো ধ্বংস করে দিচ্ছে। সংস্কৃতির বর্তমান পরিবেশের দিকে তাকালে সংস্কৃতি ধর্মীয় আবরণে বা ধর্মীয় ব্যানারকে ব্যবহার করে অপসংস্কৃতির প্রভাব সমাজের তৃণমূল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। মূল সংস্কৃতিকে মানুষের জীবনের উপজীব্য যে সব সংস্কৃতি তা টিকিয়ে রাখতে হলে বাঁচিয়ে রাখতে হলে অপসংস্কৃতির হাত ভেঙে দিতে হবে। এমনকি অপসংস্কৃতি সংগঠকদেরকে থামিয়ে দিতে হবে। সুশীল সমাজ এই বিষয়ে প্রশাসনের যোগসাজশে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই সমাজের থেকে দেশ থেকে জাতি থেকে অপসংস্কৃতি এর ছড়াছড়ি থামানো সম্ভব হবে। এখনই যদি অপসংস্কৃতি লাগাম টেনে ধরা না হয় তাহলে অচিরেই মানুষের মানবিকতা ও নৈতিকতার সঠিক দিক নির্দেশনামূলক সংস্কৃতির পথ থেকে বিচ্যুত হবে। অপসংস্কৃতি এখন সরাসরি জনসংস্কৃতির অঙ্গন হয়ে গেছে। কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে যুব সমাজ আবাল বৃদ্ধ বনিতাদের মধ্যে সেকালের সেই সংস্কৃতির প্রভাব একেবারেই বিলীন হওয়ার পথে। অপসংস্কৃতি যারা করছে অপসংস্কৃতির জোরে যারা চলছে তারাই যেন সত্যিকারের সংস্কৃতি চর্চার মধ্যে বিরাজমান। এই যে মূল সংস্কৃতি থেকে মানুষ সমাজকে কলুষিত করছে এটা অবশ্যই অবশ্যই থামানো না গেলে বড় ক্ষতির দিকে চলে যাবে। মূল সংস্কৃতি থেকে যুব সমাজ এমনিতেই ধ্বংসের মধ্যে অবস্থান করছে। যদি অপসংস্কৃতিকে রুখে না দেওয়া যায় এবং অপসংস্কৃতির দাঁত ভেঙে না দেওয়া যায় তাহলে আর কখনো সঠিক পথ পাবে না জাতি। এমনকি সঠিক পথে থাকতে পারবে না।