রিয়াজ শাওন
বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে স্কুল কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। গত ১৭ই মার্চ থেকেই বন্ধের ঘোষণা দেয় সরকার। তারপর থেকে পরি¯ি’তি বিবেচনায় বন্ধের সময়সীমা বাড়ানো হ”েছ। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা সাধারণত এত দীর্ঘ সময় বন্ধের সাথে তেমন পরিচিত নয়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই এই বন্ধ শিক্ষার্থীদের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। তাদেরই একজন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বিবিএ ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী প্রাপ্তি মজুমদার। তিনি ২০১৭ সালে হাজীগঞ্জ মডেল সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পাস করেন। মেধাবী এই শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি নৃত্য, বির্তক, আবৃত্তি, সৃজনশীল কর্মকান্ডে বরাবরই কৃতিত্ববান।
দৈনিক শপথ : মহামারি করোনার এই দূর্যোগকালীন বন্ধে পড়াশোনা কেমন চলছে?
প্রাপ্তি মজুমদার: শুরুতেই আমাদের চাঁদপুর জেলার জনপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক শপথকে ধন্যবাদ জানাই। এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। পড়াশোনা চলছে তবে চলার মত না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষকদের সাথে সরাসরি কানেক্টেড থাকা সম্ভব হ”েছ না। যার কারণে পড়াশোনা নিয়মিতভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হ”েছ না।
দৈনিক শপথ : দীর্ঘ সময় ধরে কলেজ বন্ধ। এই বন্ধ সময়ে বাসায় পড়াশোনা কিভাবে করা হয় এবং কলেজ থেকে কি কোন গাইডলাইন দেয়া হয় কিনা?
প্রাপ্তি মজুমদার: জ্বি অবশ্যই। শিক্ষকরা প্রতিনিয়ত আমাদেরকে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার জন্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে থাকেন। আমাদের কলেজ থেকে অনলাইন ক্লাসের ব্যব¯’া করা হয়েছে। তবে অনলাইন ক্লাস করে কোন উপকার হ”েছ বলে আমার মনে হয় না। ইন্টারনেট আর বিদ্যুৎতের সমস্যার জন্য অনলাইনে ক্লাস করতে অনেক সমস্যা হয়। রেজাল্টও দিনদিন খারাপ হ”েছ।
দৈনিক শপথ : বাসায় পড়াশোনা ছাড়া অন্য কি করে সময় কাটে?
প্রাপ্তি মজুমদার: বাসায় বসে বসে বই পড়ি, মুভি দেখি আর পরিবারের সাথে অবসর সময় ভালোই উপভোগ করছি।
দৈনিক শপথ : এই বন্ধের সময়টাকে আপনি কিভাবে কাজে লাগা”েছন?
প্রাপ্তি মজুমদার: এই সময়ে আমি আইইএলটিএস এর প্র¯‘তি নি”িছ। ড্রাইভিং শিখছি। ফ্রেঞ্চ ভাষা শিখছি। বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকলে এই কাজগুলো করার সময় পেতাম না।
দৈনিক শপথ : সাধারণত এত দীর্ঘ সময় ধরে কলেজ বন্ধের সাথে আপনি পরিচিত না। সেই ক্ষেত্রে এতদিন কলেজের ক্লাস থেকে দূরে থাকায় পড়াশোনা প্রতি কোন অনিহা কাজ করছে কি না?
প্রাপ্তি মজুমদার: শিক্ষার্থী হিসেবে কলেজ, শিক্ষক, ক্লাসের বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো ছিল চিরাচরিত ঘটনা। কিন্ত করোনা মহামারীর ফলে কলেজ বন্ধ থাকায় সেটি আর হ”েছ না। দীর্ঘ সময় কলেজের সাথে যোগাযোগ না থাকায় পড়ালেখা হাতে কলমে হ”েছ না। যার ফলে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমের প্রকৃত লক্ষ্য পূরন করা সম্ভব হ”েছ না।
দৈনিক শপথ : করোনার পর্রবতী কালে পড়াশোনায় কেমন প্রভাব ফেলবে বলে আপনি মনে করেন?
প্রাপ্তি মজুমদার: করোনাকালে শিক্ষার্থীর পড়াশোনার ধারাবাহিকতা নষ্ট হওয়ার কারণে পরবর্তীতে নেতিবাচাক প্রভাব বেশি পড়বে।
দৈনিক শপথ : বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষক কিংবা বন্ধু-বান্ধবী কাকে বেশি মিস করেন?
প্রাপ্তি মজুমদার:একজন শিক্ষার্থী হিসেবে কলেজের সাথে জড়িয়ে থাকা সকল স্মৃতিকে সবসময় মিস করি। শ্রেণীকক্ষটাকে সবচেয়ে বেশি মিস করি। শিক্ষকদের স্নেহ আর কলেজে বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোকেও খু মিস করি।
দৈনিক শপথ : এত লম্বা সময় ধরে কলেজ বন্ধ থাকায় আপনি কতটা খুশি?
প্রাপ্তি মজুমদার: এত লম্বা সময় কলেজ বন্ধ থাকাটা একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমার জন্য বেদনাদায়ক। এটি আমাদের কর্মক্ষেত্রেও ¯’বিরতা সৃষ্টি করেছে। জীবনের স্বাভাবিক গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে।
দৈনিক শপথ : করোনা পর্রবতীকালে আপনার ভাবনা কি?
প্রাপ্তি মজুমদার : এ পৃথিবী করোনা থেকে মুক্তি পাক এই দোয়া করি। করোনা পরবর্তীকালে গ্রাজুয়েশন শেষ করাটাই আমার প্রথম ভাবনায় থাকবে।
দৈনিক শপথ : একজন শিক্ষার্থী কি ভাবে করোনা কালে মানসিক এবং শারীরিকভাবে সু¯’ থাকতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
প্রাপ্তি মজুমদার: করোনা একটি শারীরিক সংক্রমক রোগ। যা আমাদের শরীরের জন্য বিরাট ক্ষতি। এ শারীরিক ক্ষতি মোকাবেলায় মানসিকভাবে সুদৃঢ় থাকা জরুরি। তাই আমি মনে করি, সকল শিক্ষার্থীদের উচিত স্বা¯’্যবিধি মেনে চলা এবং মানসিকভাবে সুদৃঢ় থাকা। আর এটি ই”েছ পোষন করলেই সম্ভব।
দৈনিক শপথ : একজন মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে অন্য শিক্ষার্থীদেরকে সঠিকভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আপনি কি পর্রামশ দিতে চান?
প্রাপ্তি মজুমদার: একজন শিক্ষার্থীর উচিত সবসময় শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে সংযুক্ত থাকা। করোনাকালে সেটি ¯’বির হয়ে যাওয়ায় পড়াশোনার পথ বন্ধ হয়ে যায়নি। শিক্ষার্থীরা ই”েছ করলেই বাসায় বিভিন্ন ধরনের প্রবন্ধ, সায়েন্স ফিকশন, সাধারণ জ্ঞান, কম্পিউটার সম্পর্কে ধারনা অর্জন করে কাজ করতে পারে। যা শিক্ষার্থীদের মানসিক চিন্তার উন্নয়ন সাধন করতে পারবে। পরিশেষে সকলের প্রতি অশেষ শুভকামনা।
দৈনিক শপথ আপনার সফলতা কামনা করে।
প্রাপ্তি মজুমদার: দৈনিক শপথকে ধন্যবাদ।