সুমন আহমেদ:
মতলব উত্তর উপজেলার চরকাশিম, বোরো চর, চরওমেদ, জহিরাবাদ চর, চর হুরমহিষা, চর এলেন, চর জিংকিং, চর ওয়েষ্টার, বাহেরচরে এখন পাখিদের মেলা। শীতের আগমনে অতিথি পাখির কলতানে এসব চরাঞ্চল মুখরিত হয়ে উঠেছে। আর এসব অতিথি পাখির আগমনে প্রকৃতি সেজেছে আপন সাজে। আর প্রকৃতির এসব দৃশ্য উপভোগ করতে ভিড় করছেন প্রকৃতি প্রেমীরা। বিচিত্র সব পাখির মধুর কলতানে প্রতিদিন মুখরিত হয়ে উঠছে এখানকার জনপদ।
বছরজুড়ে এসব এলাকা হরেক রকম পাখির সমাবেশে সরব থাকলেও, শীতে সাইবেরিয়াসহ পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চল থেকে আগত পাখির উপস্থিতি এই স্থানগুলো সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ। আর এতেই হাজারো প্রকৃতিপ্রেমীকে আকৃষ্ট করেছে বিচিত্র ও বর্ণিল অতিথি পাখি। পাখির টানে যেমনি ভিড় করছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা তেমনি এক শ্রেণির অসাধু পাখি শিকারিও ভিড় করছেন অতিথি পাখির নিরাপদ আশ্রয় থেকে তাদের নিধন করতে।
গফুর বাদশা নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের চরের সৌন্দর্য অনেক বাড়িয়ে দেয় অতিথি পাখি। দল বেঁধে পাখিদের উড়ে বেড়ানো আর খাবার সংগ্রহের দৃশ্য সত্যিই অতুলনীয়। পাখিদের কিচিরমিচির শুনতে অনেক ভালো লাগে। শীত মৌসুমে অনেকে পাখি দেখতে এখানে ছুটে আসেন। এতে এলাকায় মানুষের উপস্থিতি বেশি থাকে।
তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, একশ্রেণির অসাধু শিকারী বিষটোপ, ধান ও ছোট ছোট মাছের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে পাখি শিকারে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। চরে আশ্রয় নেওয়া পাখিরা অনেকটা অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া অতিথি পাখির আবাসস্থল, বিচরণভূমি ও খাদ্যের সংকটেও রয়েছে। প্রতি বছর কমতে শুরু করেছে এসব অতিথি পাখির আগমন।
স্থানীয়রা দাবি করেন, পাখিদের নিরাপদ বিচরণ নিশ্চিত না করা গেলে হয়তো কয়েক বছর পর আর এসব পাখির দেখা পাওয়া যাবে না। এতে প্রকৃতি হারাতে তার আপন সৌন্দর্য। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এসব অতিথি পাখির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার তাগিদ জানান তারা। আর যারা অতিথি পাখি শিকার করছে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর আইন প্রয়োগ করা দরকার বলেও দাবি করেন তারা।
এ ব্যাপারে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজী শরিফুল হাসান দৈনিক শপথকে বলেন, শীতের শুরুতে মতলব উত্তরের বিভিন্ন চরে অতিথি পাখির আগমন শুরু হয়েছে। যদি কেউ অতিথি পাখি নিধন করে বা শিকার করতে দেখা যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।